নিউজিল্যান্ডের বার্ষিক ‘বার্ড অফ দ্য ইয়ার’ খেতাব জিতল এক শিকারি পাখি, যার খাদ্যতালিকায় অন্যান্য পাখির স্থান সবার উপরে।
প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশটির স্থানীয় পাখিদের রক্ষার বার্তা দেওয়া হয়। এবার এই খেতাব জিতেছে ‘কারে area’ নামের একটি বাজপাখি, যা নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী মাওরি ভাষায় পরিচিত।
নিউজিল্যান্ডে পাখির প্রতি ভালোবাসা একটি বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে। এখানকার সংস্কৃতি, শিল্পকলা এমনকি শিশুদের গানেও পাখিদের উপস্থিতি বিদ্যমান।
এই কারণে ‘বার্ড অফ দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতাটি দেশটির মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রকৃতি প্রেমী মানুষজন তাদের পছন্দের পাখির জন্য অনলাইনে প্রচারণা চালায়, তৈরি হয় আকর্ষণীয় মিম ও ব্যঙ্গাত্মক পোস্টার।
প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ‘ফরেস্ট অ্যান্ড বার্ড’ নামক একটি পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা। তাদের মতে, ২০০৫ সালে সামান্য কিছু ভোটের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার শুরু হলেও, বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো, নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় পাখি এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা।
তবে, এই প্রতিযোগিতায় সব সময় যে আনন্দের আবহ থাকে, তা নয়। অতীতে ভোট নিয়ে কিছু বিতর্ক দেখা গেছে।
একবার তো এমনও হয়েছে যে, পাখি না হয়েও একটি বাদুড় এই খেতাব জিতে নিয়েছিল। এছাড়াও, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলীয় কিছু ব্যক্তি একটি পাখির পক্ষে ভুয়া ভোট দেওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
কারে area পাখিটি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি বেগে উড়তে পারে এবং শিকারের জন্য দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়তে দক্ষ।
বন্য পরিবেশে এদের সংখ্যা প্রায় ৫,০০০ থেকে ৮,০০০-এর মধ্যে। বর্তমানে এই পাখিগুলো বৈদ্যুতিক তারের কারণে আহত হয় এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে এদের জীবন হুমকির মুখে।
ফরেস্ট অ্যান্ড বার্ডের প্রধান নির্বাহী নিকোলা তোকি জানান, নিউজিল্যান্ডে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
কারণ, পর্যটকদের কাছে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পাখির প্রতি আকর্ষণ অনেক বেশি। যদি পাখির আবাসস্থলগুলো রক্ষা করা না যায়, তবে পর্যটকদের আগমন কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির উপরও প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস