আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘ইমেলদা’ এবং ‘হাম্বার্টো’ -এর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল এবং বারমুডা দ্বীপপুঞ্জে দেখা দিয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই দুটি ঘূর্ণিঝড় ঐ অঞ্চলের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইমেলদা’ ফ্লোরিডা থেকে ক্যারোলিনা পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলে শক্তিশালী ঢেউ, জলোচ্ছ্বাস এবং বন্যার সৃষ্টি করতে পারে। একই সময়ে,Category 4 মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘হাম্বার্টো’ বারমুডার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা দ্বীপটিতে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে আনবে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘ইমেলদা’ সরাসরি আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে ফ্লোরিডার উপকূল থেকে শুরু করে ক্যারোলিনা পর্যন্ত এলাকায় ২ থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও, উপকূলীয় অঞ্চলে ১ থেকে ২ ফুট পর্যন্ত জল বাড়তে পারে, যা স্বাভাবিক অবস্থার থেকে অনেক বেশি। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘হাম্বার্টো’ বারমুডার খুব কাছ দিয়ে বয়ে যাবে, যার ফলে সেখানে ভারী বৃষ্টিপাত ও শক্তিশালী বাতাস বইবে। বারমুডা আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যে দ্বীপপুঞ্জের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য ‘ইমেলদা’ এবং ‘হাম্বার্টো’ উভয় ঘূর্ণিঝড়ই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও ‘ইমেলদা’ সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা কম, তবুও এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বিপজ্জনক ঢেউ, শক্তিশালী স্রোত এবং হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বন্যা দেখা দিতে পারে।
দক্ষিণ ক্যারোলিনার গভর্নর হেনরি ম্যাকমাস্টার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং স্থানীয় প্রশাসন সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ‘ইমেলদা’ ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার কারণে ‘হাম্বার্টো’র প্রভাবে দিক পরিবর্তন করতে পারে। যার ফলে এর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলের দিকে আসার সম্ভাবনা কমে যাবে।
তবে, আবহাওয়াবিদরা এই অঞ্চলের বাসিন্দাদেরকে ঘূর্ণিঝড় দুটির গতিবিধির ওপর নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, বারমুডার জন্য পরিস্থিতি আরও গুরুতর। ‘হাম্বার্টো’ সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে আঘাত হানতে পারে। এরপর ‘ইমেলদা’ বুধবার বা বৃহস্পতিবার বারমুডার কাছাকাছি আসতে পারে।
পরপর দুটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে দ্বীপটির জন্য তা হবে একটি বড় দুর্যোগ।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত হানেনি। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়গুলোর তীব্রতা বাড়ছে।
এর ফলে ভবিষ্যতে আরও বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর জন্য এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং প্রস্তুতি রাখা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন