যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি হত্যাকাণ্ড নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। রক্ষণশীল নেতা চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিরাপত্তা রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যবস্থা ছিল না।
খবর অনুযায়ী, ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হয়নি, পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যও ছিল না, এমনকি জরুরি অবস্থার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাও ছিল দুর্বল।
গত ১০ই সেপ্টেম্বর, ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে (ইউভিইউ) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন চার্লি কার্ক। অনুষ্ঠানস্থলটি ছিল কয়েকটি উঁচু ভবনের মাঝে, যা কার্ককে এক প্রকার অরক্ষিত করে তুলেছিল।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে ছাদগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য কোনো ড্রোন ব্যবহার করা হয়নি। এমনকি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গেও নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো সমন্বয় ছিল না।
জানা গেছে, ওই দিন মাত্র ছয়জন পুলিশ সদস্যের একটি ছোট দল নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে ছিল।
অনুষ্ঠান শুরুর প্রায় ২০ মিনিটের মাথায়, একজন স্নাইপার একটি ভবনের ছাদ থেকে কার্ককে গুলি করে এবং পালিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা বিষয়টি প্রথমে বুঝতেও পারেনি।
এই ঘটনার পর, আগামী মাসগুলোতে ইউভিইউ-এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আইনপ্রণেতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা বাড়বে। ঘটনার পর অনেকেই জানতে চাইছেন, কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিতে পারতো, যা হয়তো এই মর্মান্তিক ঘটনাটি এড়ানো যেত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু দুর্বলতা ছিল, যার কারণে কার্ক অরক্ষিত ছিলেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের অনুষ্ঠানে ছাদের উপর নজরদারির জন্য ড্রোন ব্যবহার করা অপরিহার্য।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নেই। প্রায় ৪৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য সেখানে মাত্র ২৩ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
যেখানে সাধারণত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন পুলিশ সদস্য থাকেন।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বিষয়ক বাজেট বা পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এছাড়াও, জরুরি অবস্থার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল না। ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফায়ার মার্শালও ছিলেন না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলো দুর্বল, যা জরুরি পরিস্থিতিতে সমন্বয় করতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারতো।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার পর সেখানকার আইনপ্রণেতারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়ে নতুন করে ভাবছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস