JPMorgan-কে ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের জালিয়াতির অভিযোগে তরুণ উদ্যোক্তার ৭ বছরের জেল!

শিরোনাম: ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড, আমেরিকান স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা চার্লি জাভিসের সাজা

যুক্তরাষ্ট্রের একজন তরুণ উদ্যোক্তা, চার্লি জাভিসকে, তার স্টার্টআপ কোম্পানি ‘ফ্রাঙ্ক’-এর মাধ্যমে একটি বিশাল ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘ফ্রাঙ্ক’ মূলত কলেজ শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, তদন্তে জানা যায়, জাভিস তার কোম্পানির গ্রাহক সংখ্যা বাড়িয়ে দেখিয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক, জেপি মর্গান চেজ-কে তিনি প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১,৯২৪ কোটি টাকার সমান) এর বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন।

আদালতে শুনানিতে, জাভিস তার কৃতকর্মের জন্য গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তার একটি ভুলের কারণে একটি অর্থপূর্ণ উদ্যোগ কিভাবে কুখ্যাত হয়ে গেল, তা ভেবে তিনি আজও কষ্ট পান।

তবে, বিচারক জাভিসের আইনজীবীর সেই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ফ্রাঙ্কের বিক্রয় সংক্রান্ত আলোচনায় একজন ‘২৮ বছর বয়সী’ তরুণীর সঙ্গে ‘পৃথিবীর বৃহত্তম ব্যাংকের ৩০০ জন বিনিয়োগকারীর’ তুলনা করা উচিত নয়। বিচারক জেপি মর্গান চেজের দুর্বলতা নিয়েও সমালোচনা করেন, তবে তিনি স্পষ্ট করেন যে, তিনি জাভিসের অপরাধের বিচার করছেন, ব্যাংকের ‘মূর্খতা’র নয়।

‘ফ্রাঙ্ক’-এর মূল ধারণা ছিল, শিক্ষার্থীদের জন্য ফেডারেল স্টুডেন্ট এইড বা আর্থিক সহায়তার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করা। এর মাধ্যমে, ছাত্র-ছাত্রীরা যেন তাদের শিক্ষা-ঋণ এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধার জন্য সহজে আবেদন করতে পারে।

জাভিস এই প্রক্রিয়ার ডিজিটাল রূপান্তর ঘটিয়েছিলেন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সময় ও শ্রম বাঁচানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

জাভিসের এই প্রতারণার ঘটনাটি প্রযুক্তি বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এটিকে আরেক আলোচিত ঘটনা, থেরানোস-এর প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ হোমসের সঙ্গে তুলনা করছেন।

হোমসের বিরুদ্ধেও তার কোম্পানির তৈরি করা স্বাস্থ্য প্রযুক্তি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। বিচারকরা বলছেন, এমন ঘটনাগুলো তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে দ্রুত অর্থ উপার্জনের প্রবণতা এবং ব্যবসার নৈতিকতার অভাবের প্রমাণ।

প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেছেন যে জাভিসের এই জালিয়াতির মূল কারণ ছিল লোভ। তিনি ফ্রাঙ্ক-এর শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে প্রায় ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩১৯ কোটি টাকার সমান) পকেটস্থ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

আদালতকে দেওয়া এক বার্তায় প্রসিকিউটর জানান, এলিজাবেথ হোমসের ১১ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজা হওয়াটা ‘হাস্যকর’ ছিল বলে জাভিস মন্তব্য করেছিলেন, যা সম্ভবত তার অপরাধের গুরুত্বকে হালকাভাবে নেওয়ার মানসিকতার প্রমাণ।

জাভিস বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন এবং আপিলের জন্য অপেক্ষা করছেন।

এই মামলার রায়, উদীয়মান প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা। এটি প্রমাণ করে যে দ্রুত মুনাফার লোভে নৈতিকতা বিসর্জন দিলে তার ফল মারাত্মক হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *