বিশ্বের শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতি, যুক্তরাষ্ট্রের অচলাবস্থা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা।
ঢাকা, [আজকের তারিখ]। বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অচলাবস্থাকে তেমন একটা পাত্তা দিচ্ছেন না।
প্রযুক্তি খাতের শেয়ারগুলি বিশেষভাবে লাভবান হয়েছে, যার মূল কারণ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং ওপেনএআই-এর মধ্যে অংশীদারিত্বের ফলে চিপের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা।
এই মুহূর্তে, প্রযুক্তি খাতের এই উত্থানের পেছনে প্রধান কারণ হল স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স এবং এসকে হাইনিক্স-এর মত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলির ওপেনএআই-এর সঙ্গে চুক্তি।
এই চুক্তির ফলে তারা ওপেনএআই-এর ‘স্টারগেট’ ডেটা হাবের জন্য মেমোরি চিপ সরবরাহ করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, চিপের দাম বৃদ্ধির কারণে রপ্তানি বাণিজ্য ভালো থাকবে, যা গাড়ি ও অন্যান্য খাতে শুল্কের প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে।
বৃহস্পতিবার এশিয়ার বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ২.৭ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে স্যামসাং-এর শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩.৫ শতাংশ।
তাইওয়ানের চিপ প্রস্তুতকারক টিএসএমসি-র শেয়ারও ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাইপেই স্টক এক্সচেঞ্জকে ১.৫ শতাংশ বাড়াতে সাহায্য করেছে।
জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ০.৯ শতাংশ এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.৬ শতাংশ বেড়েছে।
চীনের বাজার ১ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় দিবসের ছুটিতে বন্ধ ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ১.১ শতাংশ এবং ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি দেখিয়েছে।
অন্যদিকে, ইউরোপের বাজারেও ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
জার্মানির ড্যাক্স সূচক ১.৩ শতাংশ এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক প্রায় ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক সামান্য বৃদ্ধি দেখিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও বুধবার শেয়ার সূচকগুলি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ০.৩ শতাংশ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে, যেখানে ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ০.১ শতাংশ বেড়েছে।
নাসডাক কম্পোজিটও ০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সংকটগুলি প্রায়শই বাজারের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে এবং শেয়ারের দাম বাড়াতে সহায়ক হয়।
তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার নিয়ে কিছুটা উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি তথ্য বিলম্বিত হওয়ার কারণে, কর্মসংস্থান পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে সমস্যা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে, সরকারি খাতের বাইরের সংস্থাগুলি নতুন করে কাজ দেওয়ার পরিবর্তে ৩২,০০০ কর্মসংস্থান কমিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমালে বাজারের স্থিতিশীলতা আসতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
বৃহস্পতিবার তেলের বাজারেও কিছুটা অস্থিরতা দেখা গেছে।
অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দাম সামান্য কমে ৬১.৬৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সোনার দামও ওঠা-নামা করেছে, তবে বর্তমানে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩,৯০০.৭০ ডলারে রয়েছে।
শেয়ার বাজারের এই উত্থান-পতন বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনগুলি দেশের অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের সুযোগের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, বাজারের এই অস্থিরতা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তাই বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।