যুক্তরাষ্ট্রের সারফেস ট্রান্সপোর্টেশন বোর্ডের (এসটিবি) সাবেক সদস্য রবার্ট প্রাইমাসকে বরখাস্ত করার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাইমাস-এর অভিযোগ, এই বরখাস্তকরণ ছিল অবৈধ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলত, একটি বড় রেলওয়ে মার্জার প্রস্তাবের এসটিবি-র পর্যালোচনার উপর প্রভাব বিস্তারের জন্যই এই কাজ করা হয়েছে।
ইউনিয়ন প্যাসিফিক-এর সাথে নরফোক সাউদার্ন-এর সংযুক্তির বিষয়টি এসটিবি-র পর্যালোচনার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই প্রাইমাসকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
**মামলার কারণ ও অভিযোগ**
প্রাইমাস-এর মতে, তার বরখাস্তকরণ ছিল বোর্ডের স্বাধীনতা খর্ব করার একটি অপচেষ্টা। তিনি জানান, হোয়াইট হাউস তাকে বরখাস্ত করার কোনো কারণ জানায়নি।
প্রাইমাস দীর্ঘদিন ধরে বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সব সময় নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রাইমাসকে অপসারণের মাধ্যমে ট্রাম্প সম্ভবত ইউনিয়ন প্যাসিফিক মার্জারকে সমর্থন করার জন্য বোর্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছেন।
**বোর্ডের স্বাধীনতা ও গুরুত্ব**
যুক্তরাষ্ট্রের সারফেস ট্রান্সপোর্টেশন বোর্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যা রেল পরিবহন ব্যবস্থা দেখাশোনা করে। এই বোর্ডের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়, যাতে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই তারা তাদের কাজ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বোর্ডের স্বাধীনতা বজায় রাখা দেশের অর্থনীতি ও পরিবহন ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য।
ডেমোক্রেসি ফরওয়ার্ড-এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্কাই পেরিমান বলেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বোর্ডের সদস্যদের অপসারণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
কারণ, এসটিবি সদস্যদের অদক্ষতা, দায়িত্ব পালনে অবহেলা অথবা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কেবল তখনই তাদের অপসারণ করা যায়।
**রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট**
প্রাইমাসকে বরখাস্ত করার সময় হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, তিনি নাকি প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিলেন না। এই ঘটনার পর ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটর ট্যামি बाल्डউইন-সহ অনেকেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
তাদের মতে, ট্রাম্প সম্ভবত বোর্ডকে প্রভাবিত করতে চাইছেন, যাতে ইউনিয়ন প্যাসিফিকের মার্জার অনুমোদন করা হয়।
আদালতে দায়ের করা মামলায় প্রাইমাস তার বরখাস্তকরণকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং এর মাধ্যমে বোর্ডের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। এই ঘটনা স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুরুত্বের ওপর নতুন করে আলোকপাত করেছে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস