জার্মানীর মিউনিখ বিমানবন্দরে ড্রোন ওড়ার কারণে বিমান চলাচল ফের ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। শনিবার সকালে বিমানবন্দরের কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে হয়, কারণ আকাশে ড্রোন উড়তে দেখা যায়।
এর আগে শুক্রবার রাতেও একই কারণে বিমানবন্দরের রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
জার্মানীর এই গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে ড্রোন ওড়ার ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটলো, যখন সেখানে বিশ্ববিখ্যাত “অক্টোবরফেস্ট” (Oktoberfest) উৎসব প্রায় শেষ হওয়ার পথে। এই উৎসবে যোগ দিতে আসা পর্যটকদের অনেকেই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার সকালের ঘটনার কারণে প্রায় ৬,৫০০ জন যাত্রী বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এর মধ্যে ২৩টি ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে পাঠাতে হয়েছে এবং ৫৮টি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে।
শুধু মিউনিখ নয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ডেনমার্ক, জার্মানি ও নরওয়ে সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে ড্রোন ওড়ার ঘটনা বেড়েছে, যা নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের দেশের এলসেনবোর্ন সামরিক ঘাঁটির উপর দিয়ে কিছু ড্রোন উড়ে গেছে এবং জার্মানির সীমান্তের দিকে যেতে দেখা গেছে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেন বলেছেন, যদিও ডেনমার্কে ড্রোন ওড়ার পেছনের কারণ এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি, তবে “আমরা অন্তত বলতে পারি যে, রাশিয়াই সম্ভবত ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।” এর আগে, রাশিয়া ড্রোন ওড়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
ডেনমার্ক পরে তাদের আকাশসীমায় বেসামরিক ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ করে, কারণ তারা ইউক্রেনকে সমর্থন এবং ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদার করতে কোপেনহেগেনে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ওই সম্মেলনে আকাশপথ রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল একটি “ড্রোন ওয়াল” (Drone Wall) তৈরির প্রস্তাব।
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো, বিদ্যমান বিভিন্ন অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির সমন্বয় করে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা। এর মাধ্যমে আকাশপথে নজরদারি বাড়ানো এবং সন্দেহজনক ড্রোন শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উন্নত প্রযুক্তি ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কিভাবে মোকাবেলা করা যায়, সেদিকে এখন সকলের দৃষ্টি রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন