যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যে সম্প্রতি একটি ফৌজদারি বিচার বিষয়ক বিল আইনে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনের এক নারীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর এই বিলটি তৈরি করা হয়। রাজ্যের গভর্নর জশ স্টেইন বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন, তবে এর কিছু অংশে তিনি অসন্তুষ্ট।
গত আগস্ট মাসে শার্লোট শহরে ট্রেনের কামরায় ইরিনা জারুৎস্কা নামের এক ইউক্রেনীয় নারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পরই রাজ্যের রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত আইনসভা দ্রুত একটি বিল তৈরি করে, যা বিচার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবে।
নতুন আইনে জামিনের শর্তাবলী কঠোর করা হয়েছে এবং সহিংস অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের জামিন পাওয়া কঠিন হবে। এছাড়াও, যারা বারবার অপরাধ করে তাদের ক্ষেত্রেও জামিনের নিয়ম আরও কঠিন করা হয়েছে।
গভর্নর স্টেইন বিলটিতে স্বাক্ষর করলেও এর কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, আইনটিতে তার কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যেমন – আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি। তিনি মনে করেন, এই বিলটি অপরাধীর জামিনের পরিমাণের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, অপরাধের কারণগুলোর প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি।
বিলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যা নিয়ে গভর্নরের আপত্তি রয়েছে। নর্থ ক্যারোলাইনায় ২০০৬ সালের পর থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি।
নতুন আইনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য ফায়ারিং স্কোয়াড ব্যবহারেরও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গভর্নর “বর্বর” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইরিনা জারুৎস্কার হত্যাকান্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিকবার গ্রেফতারের রেকর্ড রয়েছে। জানা যায়, এর আগেও তিনি একটি সহিংস ডাকাতির মামলায় পাঁচ বছর সাজা খেটেছিলেন।
ঘটনার আগে তাকে একটি ছোটখাটো অপরাধের জন্য জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিলটি নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, বিলটি অপরাধের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।
অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা মনে করেন, ডেমোক্র্যাটদের দুর্বল নীতির কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
গভর্নর স্টেইন সম্প্রতি রাজ্যের একটি বারে গোলাগুলির ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে তিনজন নিহত হয়। তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বাড়ানোর এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, “সহিংসতার কারণগুলো নিয়ে আমাদের বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন