ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে শোরগোল, এবার কি শিকাগোতে নামছে সেনা?

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প, রাজ্যপালের তীব্র বিরোধিতা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানকার ফেডারেল কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের কারণ হলো শহরে চলমান সহিংসতা এবং বিশৃঙ্খলা। তবে, এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার।

গভর্নর প্রিটজকার এই পদক্ষেপকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা ‘অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অ-মার্কিনসুলভ’। জানা গেছে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এরই মধ্যে শিকাগোতে বিক্ষোভ হয়েছে।

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র অ্যাবিগেল জ্যাকসন জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতা’র কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। যদিও কবে নাগাদ এবং ঠিক কোথায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হবে, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

অন্যদিকে, মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার পেট্রোল) এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শিকাগোর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে কর্তব্য পালন করার সময় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। একটি গাড়িবহর তাদের ঘিরে ফেলেছিল, এবং যখন তারা তাদের গাড়ি থেকে বের হন, তখন একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাদের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর জবাবে সীমান্তরক্ষীরা গুলি চালায়। এই ঘটনায় এক নারী আহত হয়েছেন, যিনি একজন মার্কিন নাগরিক।

শিকাগো পুলিশ বিভাগ (সিপিডি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে, তবে বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়নি। তারা বলেছে, তারা কেবল ঘটনার তদন্তে সহায়তা করছে। ঘটনার তদন্তভার ফেডারেল কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসন দেশের বিভিন্ন শহরে ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মোতায়েন করেছে। গত গ্রীষ্মে লস অ্যাঞ্জেলেসে এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানো হয়েছিল। এমনকি টেনেসির মেমফিসেও পুলিশকে সহায়তার জন্য ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের পাঠানো হতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করে মামলা করেছিলেন এবং ফেডারেল আদালত সেখানে তাদের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। ওরেগনের কর্মকর্তারাও পোর্টল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

গভর্নর প্রিটজকার অভিযোগ করেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের তাদের পরিবার এবং নিয়মিত কাজ থেকে দূরে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ‘নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা’

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *