নাইজেরিয়ান শিল্পী টেমসের সাফল্যের কাহিনী, যিনি গানের জগতে নারীদের জন্য পথ তৈরি করছেন।
আফ্রিকার সঙ্গীত জগতে নারীদের জন্য পথ প্রশস্ত করতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন নাইজেরিয়ার শিল্পী টেমস। তিনি শুধু একজন গায়িকা নন, বরং এক অনুপ্রেরণার নাম।
গানের মাধ্যমে বিশ্ব জয় করা এই শিল্পী প্রমাণ করেছেন, নিজের সংস্কৃতি আর স্বকীয়তাকে সঙ্গে নিয়ে কিভাবে সাফল্যের শিখরে ওঠা যায়।
আফ্রিকার এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের সঙ্গীত জীবন শুরু হয় নাইজেরিয়ার লাগোসে। গানের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে তিনি ছোটবেলাতেই গান লেখা শুরু করেন।
শুরুতে তেমন কারো সমর্থন না পেলেও, নিজের চেষ্টায় সঙ্গীত তৈরি করা শিখেছিলেন তিনি। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, তিনি হাল ছাড়েননি।
বরং, সেই কষ্টগুলোকেই নিজের সাফল্যের পথে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। টেমসের কথায়, “আমি সবসময় চেয়েছি নিজের মতো থাকতে। যদি নিজের মতো থাকতে গিয়ে কোনো সমস্যা হয়, হোক।
আবার যদি সাফল্যের চূড়ায় উঠি, সেটাও ভালো।”
২০২০ সালে উইজকিডের সঙ্গে ‘এসেন্স’ গানটি গেয়ে টেমস বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান। গানটি বিলবোর্ড হট ১০০-এ জায়গা করে নিয়েছিলো, যা নাইজেরিয়ার ইতিহাসে প্রথম।
এরপর ২০২২ সালে, তার ‘হায়ার’ গানের অংশ ব্যবহার করা হয় ফিউচার এবং ড্রেকের ‘ওয়েট ফর ইউ’ গানে। এই গানটিও একই চার্টে এক নম্বরে জায়গা করে নেয়।
এছাড়াও, তার ‘ফ্রি মাইন্ড’ গানটি ইউএস চার্টে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, তিনি বিয়ন্সের ‘মুভ’ এবং রিহানার ‘লিফট মি আপ’ এর মতো জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
২০২৫ সালে টেমস ‘বেস্ট আফ্রিকান মিউজিক পারফরম্যান্স’-এর জন্য গ্র্যামি পুরস্কার জেতেন, যা ছিলো নাইজেরিয়ান ক্লাসিক গানের নতুন সংস্করণ।
সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেও টেমস ভোলেননি তার শিকড়ের কথা। তিনি মনে করেন, খ্যাতি অর্জনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের যোগ্যতায় স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করা।
তাই তিনি নারীদের সঙ্গীত জগতে এগিয়ে আসার জন্য ‘দ্য লিডিং ভাইব ইনিশিয়েটিভ’ চালু করেছেন। এই প্ল্যাটফর্ম নারীদের সঙ্গীত বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দিয়ে থাকে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে টেমস শুধু নাইজেরিয়া নয়, বরং কেনিয়া সহ আরো অনেক দেশের নারীদের সঙ্গীত জগতে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।
তার মতে, “এখানে অনেক প্রতিভাবান নারী আছেন, যারা হয়তো ভালো প্রযোজক বা সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেন। কিন্তু তাদের সেই সুযোগটা দেওয়া হয় না।
আমি তাদের সেই সুযোগ তৈরি করে দিতে চাই, যেখানে তারা নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারবে।”
টেমসের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, তিনি শুধু একজন শিল্পী নন, বরং নারীদের ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তার গান এবং কাজের মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে নারীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন