মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থার কারণে বিমান চলাচলে বিপর্যয়, বাড়ছে বিলম্ব।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা দেখা দেওয়ায় দেশটির আকাশপথে বিমান চলাচলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনায় কর্মী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণে বিলম্ব হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
খবরটি জানিয়েছে সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ফ্লাইট কন্ট্রোলারদের সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, অনেক বিমানবন্দরে কর্মীদের কর্মঘণ্টা বাড়ছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে।
কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা কাজে আসার বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ফ্লাইট কন্ট্রোল টাওয়ার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ক্যালিফোর্নিয়ার বারব্যাঙ্ক বিমানবন্দরের ঘটনাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানকার কন্ট্রোল টাওয়ারে কর্মী সংকটের কারণে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে বিমানগুলোকে ছোট বিমানবন্দরের মতো করে পরিচালনা করতে হয়েছে।
অনেক ফ্লাইটের সময় ২ ঘণ্টারও বেশি দেরি হয়েছে। ডেনভার এবং নিউয়ার্কের মতো প্রধান বিমানবন্দরগুলোতেও একই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলোতেও বিলম্ব হয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সচিব শন ডাফি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কর্মীদের অনুপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তিনি বলেন, কর্মীরা তাদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তিত, যা তাদের কাজের ওপর প্রভাব ফেলছে।
তিনি সরকারি অচলাবস্থা দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানান, যাতে কর্মীদের এই দুশ্চিন্তা দূর করা যায়।
আকাশপথের নিরাপত্তা বিষয়ক একটি সংস্থার মতে, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে এফএএ-এর নিরাপত্তা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। এর আগে ২০১৮-১৯ সালের সরকারি অচলাবস্থার সময়ও এ ধরনের সমস্যা দেখা গিয়েছিল, যখন ফ্লাইট কন্ট্রোলারদের অভাবে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটেছিল।
এই অচলাবস্থার কারণে ছোট শহরগুলোতে বিমান চলাচলের জন্য ভর্তুকি বন্ধ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে অনেক রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য যোগাযোগ কঠিন করে তুলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিমান চলাচলের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতে সরকারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অপরিহার্য। কর্মীদের মনোবল এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা না গেলে, এর প্রভাব নিরাপত্তা এবং যাত্রীসেবার ওপর পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন