এপস্টাইন: তালিকা তৈরির ঘোষণা, আতঙ্কে ভুগছেন ভুক্তভোগীরা!

জেফরি এপস্টাইনের শিকারদের একটি তালিকা তৈরির সিদ্ধান্তের পেছনে লুকানো বিপদগুলো নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যৌন নিপীড়নের শিকার কয়েকজন তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করার কথা ভাবছিলেন।

তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই অপরাধে জড়িত ছিলেন এবং তাদের নাম সামনে আনা দরকার। তবে, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু গুরুতর উদ্বেগ।

গত সেপ্টেম্বরে, ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে, এপস্টাইনের কয়েকজন ভুক্তভোগী একটি তালিকা তৈরি করার কথা জানান। তারা জানিয়েছিলেন, এই তালিকায় তাদের উপর অত্যাচারকারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এই ঘোষণার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন, ভুক্তভোগীরাই সম্ভবত এই তালিকা তৈরি করবেন এবং তা প্রকাশ করবেন। কিন্তু বাস্তবে, তেমন কোনো সমন্বিত উদ্যোগ এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি।

এপস্টাইনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ধরনের তালিকা তৈরি করা তাদের জন্য আরও বেশি বিপদ ডেকে আনতে পারে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে, ভুক্তভোগীদের শারীরিক ও আইনি হুমকির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অনেক আইনজীবীও মনে করেন, ভুক্তভোগীদের এই কাজটি করা উচিত নয়। কারণ, এতে তাদের ঝুঁকি আরও বাড়বে। তাদের মতে, এই কাজটি মূলত সরকারের করা উচিত, যারা তাদের নিরাপত্তা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

মার্কিন বিচার বিভাগ (Department of Justice) জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত তথাকথিত ‘ক্লায়েন্ট লিস্ট’-এর কোনো প্রমাণ পায়নি। এমনকি, তারা এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন কোনো নথি প্রকাশ করতেও রাজি নয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীদের অনেকেই সরকারের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। তারা মনে করছেন, সরকার তথ্য গোপন করছে। এমতাবস্থায়, ভুক্তভোগীদের অনেকেই তাদের নিজেদের তালিকা তৈরির কথা ভাবছেন।

তবে, এই ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে অনেকে সতর্ক করেছেন। তারা বলছেন, তালিকা তৈরি করা হলে, সেই ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীদের উপর প্রতিশোধ আসার সম্ভাবনা থাকে।

কারণ, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী এবং তাদের প্রচুর অর্থ ও ক্ষমতা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, আইনপ্রণেতারাও (lawmakers) সরকারের কাছে আরও বেশি তথ্য প্রকাশের জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। হাউজ ওভারসাইট কমিটি (House Oversight Committee) ইতোমধ্যে এপস্টাইনের মামলার কিছু নথি প্রকাশ করেছে।

তবে, ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রকাশিত তথ্যের মাধ্যমে তাদের কোনো উপকার হয়নি।

এপস্টাইনের শিকারদের এই তালিকা তৈরির সিদ্ধান্তের জটিলতা এবং এর সঙ্গে জড়িত ঝুঁকিগুলো এখনো আলোচনার বিষয়। অনেকেই মনে করেন, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রতি সুবিচার করাই এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *