বাটন কিং: বোতামের সাম্রাজ্য যিনি জয় করেছিলেন বিশ্ব
দক্ষিণ ক্যারোলিনার এক প্রান্তিক জনপদে বাস করা ডাল্টন স্টিভেন্স, যিনি ‘বাটন কিং’ নামেই পরিচিত ছিলেন, বোতাম দিয়ে তৈরি করা শিল্পকর্মের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৮০-এর দশকে টেলিভিশনের পর্দায় তিনি যখন জনি কারসনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন, তখন থেকেই তার খ্যাতি বাড়তে শুরু করে।
তাঁর এই ব্যতিক্রমী শিল্পকর্ম আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে, যা প্রমাণ করে মানুষের সৃজনশীলতা কোনো সীমানা মানে না।
স্টিভেন্সের শিল্পকর্মের শুরুটা হয় ১৯৮৩ সালে, অনিদ্রা এবং অবসাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে। প্রথমে তিনি একটি ডেনিম স্যুট বোতাম দিয়ে ভরিয়ে তোলেন। এরপর ধীরে ধীরে তিনি তার সৃজনশীলতার বিস্তার ঘটান।
তাঁর বোতাম দিয়ে মোড়ানো একটি শেভ্রোলেট শেভেট গাড়ি, বাথরুমের দেয়াল থেকে শুরু করে পিয়ানো – সবকিছুতেই বোতামের কারুকাজ দেখা যেত। তাঁর তৈরি করা একটি কফিন ছিল, যেখানে সাদা বোতামগুলো “বাটন কিং” শব্দটি ফুটিয়ে তুলেছিল।
জনি কারসনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ স্টিভেন্সের জীবন বদলে দেয়। সেই অনুষ্ঠানে তিনি ১৬,৩৩৩টি বোতাম দিয়ে মোড়ানো একটি স্যুট পরে এসেছিলেন, যা দর্শকদের হাসির খোরাক জুগিয়েছিল। তিনি গান গেয়ে শোনান এবং তাঁর জীবনের নানা গল্প তুলে ধরেন।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং তাঁর খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও ছড়িয়ে পরে। ডেভিড লেটারম্যান, রেগিস ফিলবিন এবং ক্যাথি লি গিফোর্ডের মতো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন।
বাটন কিং তাঁর শিল্পকর্মগুলো প্রদর্শনের জন্য একটি জাদুঘর তৈরি করেন, যা বর্তমানে তাঁর ছেলে জে.ডি. স্টিভেন্সের তত্ত্বাবধানে খোলা রয়েছে। জাদুঘরে এখনো তাঁর তৈরি করা নানান শিল্পকর্ম রয়েছে, যা দর্শকদের কাছে আজও সমানভাবে প্রিয়।
জে.ডি. স্টিভেন্স তাঁর বাবার স্মৃতি হিসেবে এই জাদুঘরটি সবসময় খোলা রাখেন, যা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে আসা দর্শনার্থীরা তাঁর বাবার কাজ দেখে আনন্দ পান।
বাটন কিং-এর জীবন ছিল সাধারণ মানুষের কাছে এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। তাঁর সৃজনশীলতা, কঠোর পরিশ্রম এবং মানুষকে হাসানোর ক্ষমতা তাঁকে সবার কাছে স্মরণীয় করে রেখেছে।
তাঁর কাজ প্রমাণ করে, সামান্য উপকরণ দিয়েও অসাধারণ কিছু তৈরি করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস