যুক্তরাজ্যের এক সময়ের প্রভাবশালী কনজারভেটিভ পার্টি, যারা একসময় বিশ্বের সবচেয়ে সফল রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে টিকে থাকার জন্য কঠিন লড়াই করছে। দলটি এখন তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর সংকটে নিমজ্জিত।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলটি একদিকে যেমন বামপন্থী লেবার পার্টির সঙ্গে, তেমনই ডানপন্থী রিফর্ম ইউকের মতো দলের সঙ্গেও তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়েছে।
দলটির বর্তমান নেত্রী কেমি ব্যাডেনোচ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নীতি গ্রহণ করে দলের পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক হারে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশগত লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করার মতো বিষয়গুলো।
যদিও দলের অভ্যন্তরে এই নতুন নীতি নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ব্যাডেনোচের নেতৃত্ব এবং দলের এই নতুন পথে হাঁটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা তাদের সাফল্যের দিনগুলো, বিশেষ করে ১৯৮০-এর দশকে মার্গারেট থ্যাচারের সময়কে স্মরণ করছেন। ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে থ্যাচারের ছবি সংবলিত কাটআউট এবং তাঁর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এমনকি, সম্মেলনে থ্যাচার হুইস্কি’র মতো পণ্যও প্রদর্শন করা হয়, যার প্রতিটি বোতলের দাম ছিল প্রায় ১১,৯০০ টাকা (৮৫ পাউন্ড)।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাডেনোচ দলের ডান দিকে মোড় নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যা অনেক ভোটারের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করেছে। তাঁর এই পদক্ষেপ দলের আবেদনকে আরও সংকীর্ণ করে দিতে পারে।
অনেকে মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন—এসব ইস্যুতে রক্ষণশীলদের অবস্থান একসময় স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু এখনকার নীতি সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
রিফর্ম ইউকে পার্টির উত্থান কনজারভেটিভ পার্টির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফ্যারেজের জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বাড়ছে, যা কনজারভেটিভ পার্টির ভোট ব্যাংককে দুর্বল করে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফ্যারেজের কঠোর নীতির সঙ্গে ব্যাডেনোচের নীতির মিল থাকায় ভোটারদের মধ্যে বিভেদ আরও বাড়তে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৯ সালের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, ব্যাডেনোচের দুর্বল জনসমর্থন এবং পার্লামেন্টে তাঁর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তাঁর আগেই পদত্যাগের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তথ্য সূত্র: