খেলাধুলার উন্মাদনা: স্টেডিয়ামে কেন এমন মারামারি?
খেলা ভালোবাসেন এমন মানুষের কাছে, বিশেষ করে যখন প্রিয় দল জেতে, তখন যেন আনন্দের সীমা থাকে না। খেলোয়াড়দের জয় দেখতে স্টেডিয়ামে ভিড় করেন হাজারো দর্শক।
তবে এই আনন্দের মাঝে মাঝে দেখা যায় অন্য চিত্র। খেলার মাঠের উত্তেজনায় অনেক সময় দর্শকদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় মারামারি, যা খেলাধুলার পরিবেশকে কলুষিত করে।
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে খেলা দেখতে গিয়ে দর্শকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা বেড়েছে, যা উদ্বেগের কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এনএফএল)-এর খেলাগুলোতে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। ওয়াশিংটন কমান্ডার্স এবং নিউ ইয়র্ক জায়ান্টসের খেলা চলাকালীন সময়ে দুই দর্শকের মধ্যে মারামারি হয়, যা পরবর্তীতে আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পরে।
একইভাবে, সিনসিনাটি বেঙ্গলস এবং জ্যাকসনভিল জাগুয়ার্সের খেলাতেও দর্শকদের মধ্যে ঝগড়া দেখা যায়, যা মারামারিতে রূপ নেয়। এইসব ঘটনায় টিকিট নিয়ে বা খেলা দেখার সময় সামান্য বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি থেকে শুরু হয়, যা পরবর্তীতে সহিংস রূপ নেয়।
এই ধরনের ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে লেখক বিল বুফোর্ডের একটি বইয়ের কথা জানা যায়, যেখানে তিনি ব্রিটিশ ফুটবল সমর্থকদের (হুলিগান) নিয়ে গবেষণা করেছেন।
বুফোর্ড দেখিয়েছেন, কিভাবে খেলার মাঠের উন্মাদনা মানুষের মধ্যে এক ধরনের জাতীয়তাবাদ তৈরি করে, যা অনেক সময় সহিংস আচরণের দিকে নিয়ে যায়।
খেলার মাঠে নিজের দলের প্রতি সমর্থন জানাতে গিয়ে অনেক সময় অন্য দলের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধ বাধে, যা মারামারির কারণ হয়।
এছাড়াও, অতিরিক্ত মদ্যপান অনেক সময় দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে এবং সহিংসতার কারণ হয়।
খেলাধুলা আমাদের আনন্দ দেয়, কিন্তু সেই আনন্দ উপভোগ করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে।
খেলাকে উপভোগ করার জন্য সবার আগে প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান ও সহমর্মিতা। সামান্য বিষয় নিয়ে উত্তেজিত না হয়ে খেলাকে খেলার মতোই উপভোগ করা উচিত।
খেলাধুলায় জয়-পরাজয় থাকবেই, তাই প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা প্রতিটি দর্শকের দায়িত্ব।
তথ্যসূত্র: সিএনএন