ভারতে শিশুদের মৃত্যুর কারণ: কাশির সিরাপ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি সতর্কতা!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ভারত থেকে উৎপাদিত তিনটি কাশির সিরাপের ব্যবহার ও বিতরণ বন্ধ করার জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে। এই সিরাপগুলির কারণে শিশুদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (স্থানীয় সময়) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কোল্ডরিফ, রেসপিফ্রেশ টিআর এবং রিলাইফ নামক এই সিরাপগুলি সেবনের ফলে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই সিরাপগুলি তৈরি করেছে ভারতের তিনটি কোম্পানি: স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালস, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শেপ ফার্মা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, তরল সিরাপগুলিতে ডাইইথিলিন গ্লাইকল (DEG) -এর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই বিষাক্ত উপাদানটি শিশুদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করতে পারে, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বর্তমানে অবৈধভাবে এই সিরাপগুলি ভারতে রপ্তানি হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে তারা আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে এই তিনটি কোম্পানির তৈরি করা অন্য তরল ওষুধগুলোর দিকে নজর রাখতে বলেছে।

ভারতে তৈরি কাশির সিরাপের কারণে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও, ২০২৩ সালে উজবেকিস্তান এবং গাম্বিয়ায় শিশুদের মৃত্যুর সঙ্গে এই ধরনের সিরাপের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ঘোষণার পরেই, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ উৎপাদক তিনটি কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং তাদের পণ্যের অনুমোদনও বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, বাজার থেকে দূষিত পণ্যগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে কোল্ডরিফ সিরাপ সেবনের কারণে অন্তত ১৯ জন শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

তদন্তে জানা গেছে, সিরাপটিতে ডিইজি-এর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি ছিল। তামিলনাড়ু রাজ্যের পুলিশ স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে এবং কয়েকজন কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে ঔষধ পরীক্ষার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের জন্য ওষুধ কেনার আগে তার গুণগত মান ও উপাদান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (Directorate General of Drug Administration) মতে, ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ প্রতিরোধের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানো এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *