ভোটের অধিকার আইন: সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পথে?

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ভোটাধিকার আইন পুনর্বিবেচনা করতে চলেছে, যা সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে সংখ্যালঘু ভোটারদের অধিকার আরও খর্ব হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইন (Voting Rights Act), যা মূলত কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, তার কিছু অংশ পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এখন লুইজিয়ানার একটি মামলার শুনানিতে এই আইনের ব্যাখ্যা পর্যালোচনা করছে। এই মামলার মূল বিষয় হলো, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে (redistricting) জাতিগত বিবেচনা আনা যাবে কিনা।

লুইজিয়ানার এই মামলায় অভিযোগ উঠেছে যে, রাজ্যের নতুন মানচিত্রে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের একটি নির্দিষ্ট জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে তাদের ভোটের ক্ষমতা কমানো হয়েছে। সাধারণত, সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘু জেলা (majority-minority districts) তৈরি করা হয়, যেখানে একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। এর ফলে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন। তবে এই ধরনের জেলার ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সমান অধিকারের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা, সেই বিষয়টি এখন বিতর্কের কেন্দ্রে।

যদি সুপ্রিম কোর্ট এই আইনের দুর্বল করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সংখ্যালঘু ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। এর ফলে লুইজিয়ানাসহ অন্যান্য রাজ্যেও নির্বাচনী ফলাফলের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে ২০২৬ সালের নির্বাচনে এর ফল দেখা যেতে পারে।

ঐতিহাসিকভাবে, এই ভোটাধিকার আইনটি আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। ১৯৬০-এর দশকে, যখন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করা হতো, তখন এই আইন তাদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

এই মামলার শুনানিতে বিচারপতিদের বিভিন্ন মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, তাঁরা এই আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। কেউ কেউ বলছেন, জাতিগত বিভাজন বিবেচনায় নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ এই আইনের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের বিরোধিতা করছেন।

অন্যদিকে, কেউ কেউ মনে করেন, এই আইনটি সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করে।

লুইজিয়ানার এই মামলার রায় শুধু সেই রাজ্যের জন্য নয়, বরং সারা দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলবে। তাই, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *