স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ওয়েমো (Waymo) ২০২৬ সাল নাগাদ লন্ডনে তাদের চালকবিহীন ট্যাক্সি চালু করার পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের স্বয়ংক্রিয় গাড়ির পরিষেবা আরও বিস্তৃত করার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ওয়েমো।
ওয়েমো জানিয়েছে, তারা খুব শীঘ্রই লন্ডনের রাস্তায় তাদের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি পরীক্ষা করা শুরু করবে। শুরুতে, গাড়িতে একজন নিরাপত্তা চালক থাকবেন যিনি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ওয়েমো কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের সরকারের কাছ থেকে তাদের পরিষেবা চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন চাইবে।
ওয়েমোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে লন্ডনে তাদের পরিষেবা চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। একইসঙ্গে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে বাণিজ্যিক রাইড-হেইলিং (ride-hailing) সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাবে তারা।
বর্তমানে, ওয়েমোর স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্স, সান ফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস, আটলান্টা এবং অস্টিন শহরে চালু রয়েছে। এই বছর, তারা জাপানে স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে মিলে পরীক্ষার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে, যদিও সেখানে বাণিজ্যিক পরিষেবা চালুর কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ওয়েমো মূলত গুগলের একটি গোপন প্রকল্প হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল এবং পরে এটি একটি আলাদা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
যুক্তরাজ্যে স্বয়ংক্রিয় গাড়ির জন্য নতুন কিছু নিয়ম তৈরি করা হয়েছে, যা রাস্তায় এই ধরনের যান চলাচলের পথ সুগম করবে। এই নিয়ম অনুযায়ী, স্বয়ংক্রিয় গাড়িগুলোকে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে “কমপক্ষে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ চালকদের” মতো পারদর্শী হতে হবে এবং কঠোর নিরাপত্তা পরীক্ষাগুলোও উত্তীর্ণ হতে হবে। ওয়েমো আশা করছে, তারা ২০২৩ সালের বসন্তকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া সরকারের একটি পাইলট প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারবে, যেখানে ছোট আকারে স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি ও বাসের পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
লন্ডনের পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ‘ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন’ (টিএফএল), এই শহরের ঐতিহ্যবাহী ব্ল্যাক ক্যাবসহ অন্যান্য ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সিংয়ের বিষয়টি দেখাশোনা করে। ওয়েমোকে টিএফএল-এর নিয়মকানুনও মেনে চলতে হবে। আমাদের দেশের বিআরটিএ’র (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) মতো, টিএফএলও লন্ডনের পরিবহন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করে।
ভবিষ্যতে, উন্নত প্রযুক্তির এই স্বয়ংক্রিয় যান পরিষেবা বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারে কিনা, সে বিষয়েও হয়তো আলোচনা হতে পারে। উন্নত বিশ্বের এই ধরনের প্রযুক্তি আমাদের দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে, আবার একইসঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস