যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফেডারেল তহবিল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে এর বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কিছু শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, ভর্তিতে লিঙ্গ ও জাতিগত পরিচয় বিবেচনা না করা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত করা এবং একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গ সংজ্ঞা গ্রহণ করা। খবরটি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
কিন্তু এরই মধ্যে ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা একাডেমিক স্বাধীনতা ও প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের এই পদক্ষেপ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে প্রস্তাবিত চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আদর্শগত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, শিক্ষক ও কর্মীদের দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যায়ন করা, এবং লিঙ্গের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা।
এছাড়া, যে সকল বিভাগে রক্ষণশীল চিন্তা-চেতনার বিরোধিতা করা হয়, সেগুলো সংস্কার বা বন্ধ করারও কথা বলা হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখতে, টিউশন ফি পাঁচ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি না করতে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট কোটা রাখতে হবে। চুক্তিতে রাজি হলে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফেডারেল অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে এবং হোয়াইট হাউসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
এছাড়া, কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনারও সুযোগ থাকবে। চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের অংশগ্রহণে একটি বার্ষিক ‘বেনামি জরিপ’-এর আয়োজন করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এমআইটি-র প্রেসিডেন্ট স্যালি কোর্নব্লুথ বলেছেন, তাঁরা এই বিষয়গুলোর গুরুত্ব স্বীকার করেন, তবে চুক্তির শর্তগুলো তাদের স্বাধীনতাকে সীমিত করবে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা এইচ. প্যাক্সনও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন।
তিনি জানান, তাঁরা সরকারের সঙ্গে পূর্বে করা একটি চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, তবে এই প্রস্তাবটি তাঁদের একাডেমিক স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে, ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া ও ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি কর্মদল গঠন করেছে এবং ডার্টমাউথ কলেজের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তাঁরা কোনোভাবেই তাঁদের একাডেমিক স্বাধীনতাকে খর্ব করবেন না।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তারা এই প্রস্তাবের ওপর হোয়াইট হাউসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম তাঁর রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এই চুক্তিতে রাজি না হতে সতর্ক করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।