ভয়ংকর হুঁশিয়ারি! অর্থনীতির ‘আরশোলা’ নিয়ে জামি ডাইমনের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য!

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ‘ছোট ছোট বিপদ’ লুকিয়ে আছে, এমন সতর্কবার্তা দিচ্ছেন জেপি মর্গান চেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেমি ডিমন। তাঁর এই উদ্বেগের কারণ হল, সম্প্রতি দেশটির বাজারে দুইটি দেউলিয়া হওয়ার ঘটনা।

এই দেউলিয়াগুলো মূলত ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ এবং গোপন আর্থিক লেনদেনের ফলস্বরূপ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমে বৃহত্তর অর্থনৈতিক দুর্বলতাগুলো সামনে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

গত মাসে, সাব-প্রাইম অটো ঋণদাতা ট্রাইকালার হোল্ডিংস-এর দেউলিয়া হওয়া ছিল একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের ঋণ সাধারণত দুর্বল ক্রেডিট স্কোর সম্পন্ন গ্রাহকদের দেওয়া হয়।

এই দেউলিয়া হওয়ার পেছনে উচ্চ জীবনযাত্রার খরচ এবং দুর্বল কর্মসংস্থান পরিস্থিতিকে দায়ী করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, গাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক গ্রাহক তাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

জেপি মর্গান নিজেও এই দেউলিয়া থেকে ১৭০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এরপরই, প্রাইভেট মালিকানাধীন একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, ফার্স্ট ব্র্যান্ডস চ্যাপ্টার ১১-এর অধীনে দেউলিয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই দেউলিয়া হওয়ার মূল কারণ ছিল একটি জটিল ঋণ প্রকল্প, যা ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস-এর তদন্তের আওতায় এসেছে।

ফার্স্ট ব্র্যান্ডস, তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অফ-ব্যালেন্স শীট ফাইন্যান্সিংয়ের আশ্রয় নিয়েছিল। এর মাধ্যমে তারা তাদের হিসাবের বাইরে ঋণ সংগ্রহ করে।

এই প্রক্রিয়ায় তারা একই চালান বারবার ব্যবহার করে বিভিন্ন ঋণদাতার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়কার লেহম্যান ব্রাদার্সের ঘটনার সঙ্গে এই পরিস্থিতির মিল রয়েছে। লেহম্যান ব্রাদার্সও তাদের ঋণের পরিমাণ গোপন করার জন্য হিসাবরক্ষণ কারসাজির আশ্রয় নিয়েছিল।

জেমি ডাইমন সতর্ক করে বলেছেন, এই ধরনের ঘটনাগুলো সম্ভবত আরও অনেক জায়গায় ঘটছে। তিনি একে ‘ছোট ছোট বিপদ’ বা ‘cockroaches’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা একটি বৃহত্তর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

তাঁর মতে, বাজারের এই অস্থিরতা হয়তো কোম্পানি-নির্দিষ্ট সমস্যাগুলোর ফল, তবে ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের মতো, এখানেও মূল সমস্যাগুলো হয়তো ওয়াল স্ট্রিটের অলিগলিতে লুকিয়ে আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের ফলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্সে পরিবর্তন আসতে পারে।

তাই, এই ধরনের ঘটনাগুলোর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *