যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে মিলিত হওয়ার আগে কিয়েভকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে তার অবস্থান কিছুটা নরম করেছেন। বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ট্রাম্প এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসে শুক্রবার জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে আসছে, যা তাদের সামরিক সক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা প্রায় ৯৯৫ মাইল বা ১,৬০০ কিলোমিটার। ইউক্রেন আশা করছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পেলে তারা রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানতে পারবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও অবকাঠামো ধ্বংস করতে পারবে।
তবে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্পের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তিনি এখনই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে রাজি নন। ট্রাম্প বলেছেন, “আমাদেরও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য টমাহক দরকার। আমাদের অনেক আছে, তবে আরও প্রয়োজন। আমরা আমাদের দেশকে নিঃশেষ করতে পারি না।”
পুতিন ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, কিয়েভকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রুশ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, পুতিনের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ “যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পরিবর্তন করবে না, তবে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করবে।”
ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির মধ্যে এটি চতুর্থবার মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে। গত এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এটি তাদের দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে, ট্রাম্প ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেন। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করাকে তার প্রধান বৈদেশিক নীতি অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এই বিষয়ে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে নতুন করে আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন।
পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের আগে ট্রাম্প রাশিয়ান নেতার প্রতি কিছুটা অসন্তুষ্ট ছিলেন। গত মাসে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, ইউক্রেন রাশিয়ার কাছ থেকে হারানো সব অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন। তবে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প ইউক্রেন নিয়ে অপেক্ষাকৃত নিরপেক্ষ সুর বজায় রেখেছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে সম্ভবত সরাসরি আলোচনা নাও হতে পারে। ট্রাম্প বলেছেন, “তারা দু’জন খুব ভালোভাবে মিশে না। তাই আমরা হয়তো এমন কিছু করব যেখানে তারা আলাদা থাকবে।”
আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিরোসহ উভয় দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা একটি অনির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্প খুব শীঘ্রই হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে দেখা করে যুদ্ধ বন্ধের উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।