যুদ্ধ থামানোর আলোচনা: ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের সাক্ষী হচ্ছে হাঙ্গেরি!

শিরোনাম: ইউক্রেন যুদ্ধ: হাঙ্গেরিতে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের সম্ভাবনা, আলোচনার কেন্দ্রে ভিক্টর অরবানের ভূমিকা

বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরি – ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আসন্ন বৈঠকটি সম্ভবত হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত হতে পারে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের আমন্ত্রণে এই বৈঠকের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত অরবানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে আলোচনাটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলছে এবং এর সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই বৈঠকের স্থান হিসেবে বুদাপেস্টকে বেছে নেওয়ার পেছনে হাঙ্গেরির বিশেষ একটি অবস্থান কাজ করছে। হাঙ্গেরি দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে আসছে এবং ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পাঠানোর বিরোধিতা করে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী অরবান মনে করেন, হাঙ্গেরি একমাত্র দেশ, যারা প্রকাশ্যে শান্তির পক্ষে কথা বলেছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যারা ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করতে চাইছে তাদের বিরোধিতা করেছে। তিনি এটিকে বুদাপেস্টকে বৈঠকের স্থান হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হাঙ্গেরির এই অবস্থান একদিকে যেমন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য। এই আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এমতাবস্থায়, হাঙ্গেরিতে পুতিনের আগমন একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। যদিও, সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বুদাপেস্ট সফরের সময় অরবান আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

১৯৯৪ সালে বুদাপেস্টে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার নিশ্চয়তা দিয়ে একটি স্মারক স্বাক্ষর করে। এর বিনিময়ে ইউক্রেন তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের মাধ্যমে রাশিয়া এই চুক্তির লঙ্ঘন করে। এরপর ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বুদাপেস্টে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে তা শুধু একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিভেদ আরও স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *