যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির কড়া নজরদারির কেন্দ্রে শিকাগো শহর, বাড়ছে উদ্বেগ।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ক নীতি কঠোর করার প্রেক্ষাপটে শিকাগো শহরে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা শহরটিকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। সম্প্রতি, অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নিয়ে এখানে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহে, ফেডারেল এজেন্টদের অভিযানে ১ হাজারের বেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযান ‘অপারেশন মিডওয়ে ব্লিটজ’ নামে পরিচিত, যা গত ৮ই সেপ্টেম্বর থেকে ৩রা অক্টোবরের মধ্যে চালানো হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, তারা “গুরুতর অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে এবং ইলিনয়কে পুনরায় নিরাপদ করতে” বদ্ধপরিকর।
আদালতে চলমান মামলার পাশাপাশি, প্রতিবাদকারীরাও রাস্তায় নেমে এসেছেন। শিকাগোর ব্রডভিউ এলাকায় অবস্থিত একটি অভিবাসন বিষয়ক অফিসের বাইরে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অভিবাসন কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের সময় অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, বিচারক সারা এলিস প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে ফেডারেল এজেন্টদের সংঘর্ষের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এজেন্টদের বডি ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তাদের কার্যক্রম রেকর্ড করা যায়।
আদালত সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিচারক এলিস অভিবাসন বিষয়ক বিভাগের প্রধান রাসেল হটের কাছে জানতে চেয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ব্যবহারের আগে কেন কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, একটি ঘটনায় ফেডারেল কর্তৃপক্ষের ব্যবহৃত একটি গাড়ি ১,০০০ মাইলের বেশি দূরে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মেরিমার মার্টিনেজ নামের এক মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ওই গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিলেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত একটি গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সরিয়ে নেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্টিনেজের আইনজীবী।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, শিকাগোর শহরতলীতে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ, ওই কর্মকর্তা মন্টেনেগ্রো থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এখানে ছিলেন। এই ঘটনায় অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে একজন অবৈধ অভিবাসী পুলিশের চাকরি করতে পারেন।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আপিল আদালত ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। আদালত জানিয়েছে, ইলিনয়ে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এছাড়াও, শিকাগো অঞ্চলের একটি আদালত ঘোষণা করেছে যে, তারা অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তাদের তাদের আদালতে কাউকে গ্রেপ্তার করতে দেবে না।
শিকাগোর এই ঘটনাগুলো অভিবাসন নীতি, নাগরিক অধিকার এবং কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগের মতো বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। এই ঘটনাগুলো অভিবাসন বিষয়ক বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন