“৬-৭” – এই শব্দবন্ধটি এখন সারা বিশ্বে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। শুনতে হয়তো সামান্য, কিন্তু এর প্রভাব এতটাই যে, এটি এখন স্কুল-কলেজের ক্লাসরুম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যন্ত সর্বত্র আলোচনার বিষয়।
সম্প্রতি, “৬-৭” নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এর উৎপত্তি, তাৎপর্য এবং এর পেছনের কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
আসলে, “৬-৭” কোনো বিশেষ অর্থ বহন করে না। এটি যেন অনেকটা “ভাইরাল” হওয়া একটি শব্দবন্ধ, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজেদের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করতে সাহায্য করে।
যখন কোনো শিক্ষক ক্লাসে ৬৭ নম্বর পাতা খুলতে বলেন, অথবা যখন দুপুরের খাবারের বিরতি ৬-৭ মিনিটের জন্য থাকে, তখনই এই “৬-৭” ধ্বনি শোনা যায়। যেন এটি তাদের নিজস্ব একটি ভাষা, যা অন্যদের থেকে তাদের আলাদা করে।
এই “৬-৭” শব্দবন্ধটির উৎপত্তির পেছনে রয়েছে একটি গান এবং বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের অঙ্গভঙ্গি। “ডুট ডুট (৬ ৭)” শিরোনামের একটি গান থেকেই সম্ভবত এর সূত্রপাত।
এছাড়া, বাস্কেটবল খেলোয়াড় টায়লেন কিনের একটি অঙ্গভঙ্গিও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই দুটি বিষয় combined হয়ে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পরে এবং তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়।
তবে, মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, “৬-৭”-এর এই জনপ্রিয়তা নিছক কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটি তরুণদের একটি “ইন-গ্রুপ”-এর অংশ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে তৈরি হয়েছে।
ভাষার মাধ্যমে তারা একটি দল গঠন করতে চায়, যেখানে অন্যদের প্রবেশাধিকার নেই। যারা এই “ভাষা” বোঝে না, তারা যেন সেই দলের বাইরে থেকে যায়।
শিক্ষকরাও এখন এই “৬-৭”-এর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। কেউ কেউ ক্লাসে এটি ব্যবহার করতে শুরু করেছেন, আবার কেউ এটিকে এড়িয়ে চলছেন।
তাদের মতে, হয় এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে, নয়তো এটিকে উপেক্ষা করতে হবে।
অবশ্যই, “৬-৭”-এর মতো শব্দবন্ধগুলো হয়তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাবে। কিন্তু এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজেদের একটি জগৎ তৈরি করার যে প্রবণতা, সেটি সবসময়ই বিদ্যমান থাকবে।
এই ধরনের প্রবণতা তাদের সামাজিকীকরণে সাহায্য করে এবং তাদের মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “৬-৭”-এর জনপ্রিয়তা তরুণ প্রজন্মের স্বাভাবিক আচরণেরই একটি অংশ। এটি তাদের নিজস্ব ভাষা এবং সংস্কৃতির একটি বহিঃপ্রকাশ।
তাই, এটিকে “ব্রেইনরট” বা মস্তিষ্কের ক্ষয় হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই। বরং, এটি তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার একটি উদাহরণ।
তথ্যসূত্র: সিএনএন