শিরোনাম: কেলেঙ্কারির ঢেউ: রাজপরিবার থেকে দূরে সরানো হচ্ছে প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে।
যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রু, যিনি বহু বছর ধরে নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন, অবশেষে তাঁর রাজকীয় উপাধিগুলো থেকে অব্যাহতি নিতে রাজি হয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু ইমেইল থেকে জানা যায়, বিতর্কিত ব্যক্তি জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সম্পর্ক ছিল, যা তিনি আগে স্বীকার করেননি।
এর পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রিন্স অ্যান্ড্রু, প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় পুত্র, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল, যা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে।
যদিও তিনি সরাসরি দোষ স্বীকার করেননি, কিন্তু অভিযোগকারীর সঙ্গে তিনি একটি আপস-মীমাংসায় এসেছিলেন। এছাড়াও, তাঁর কিছু বন্ধু এবং ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল, যা জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাকিংহাম প্যালেস থেকে জানানো হয়েছে, প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁর বাকি রাজকীয় উপাধিগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করবেন। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো যেন রাজার (King Charles) কাজের ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি না করে।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাজপরিবার নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করছে।
রাজপরিবারের একজন বিশেষজ্ঞ ক্রেইগ প্রেসকটের মতে, “প্রিন্স অ্যান্ড্রু জনসাধারণের কাছে মিথ্যা কথা বলেছেন, যা ক্ষমার অযোগ্য।” এই ঘটনা যুক্তরাজ্যের রাজতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসাবে দেখা যাচ্ছে।
বর্তমান রাজা চার্লস (King Charles), যিনি ৭৬ বছর বয়সী এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়ামের (Prince William) অধীনে রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীল করতে কাজ করছেন।
প্রিন্স উইলিয়াম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, রাজপরিবারকে ভালো কাজের জন্য পরিবর্তন হতে হবে।
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর এই পদক্ষেপে অনেকে মনে করছেন, রাজার পক্ষ থেকে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। রাজপরিবারের অন্য সদস্যরাও চাইছিলেন, এই বিতর্ক থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যাক।
কারণ, এর ফলে রাজপরিবারের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল।
এই ঘটনার ফলে রাজপরিবারের সদস্যরা এখন আরও সতর্ক হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ভবিষ্যতে যদি প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ আসে, তবে তার দায়ভার সম্পূর্ণভাবে তাঁর নিজের ওপর বর্তাবে।
রাজপরিবার এখন চাইছে, প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে ছিন্ন করতে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা তাদের সম্মানহানি করতে না পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস