ট্রাম্পের ব্র্যান্ডিং কৌশল: মার্কিন প্রশাসনেও তার নামের ছড়াছড়ি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি একসময় ব্যবসার জগতে নিজের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন, এবার সেই কৌশল প্রয়োগ করেছেন দেশের সরকারের ওপরও।

ব্যবসার জগতে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করার পর, তিনি এখন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে নিজের নাম যুক্ত করছেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। খবর প্রকাশ করেছে সিএনএন।

ট্রাম্পের এই ব্র্যান্ডিং-এর অংশ হিসেবে রয়েছে ‘ট্রাম্পআরএক্স’ নামে একটি ওয়েব সাইট, যেখানে প্রেসক্রিপশন-এর ঔষধের ওপর ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়াও, ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’-এর মতো প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ করে দেবে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

এমনকি, ট্রাম্পের ছবি সংবলিত মুদ্রা এবং ‘এফ-47’ নামে একটি যুদ্ধ বিমানের ধারণাও তৈরি করা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ব্র্যান্ডিং এবং বিপণনের ওপর জোর দিয়েছেন।

তাঁর বিখ্যাত ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (MAGA) স্লোগানটি ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত হয়েছিল, যা আজও একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প খুব ভালোভাবে জানেন কীভাবে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে হয়।

তাঁর এই কৌশল অত্যন্ত সরল এবং সহজে মনে রাখার মতো, যা যেকোনো মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

তবে, সমালোচকরা বলছেন, সরকারের সঙ্গে ট্রাম্পের এই ধরনের ব্র্যান্ডিং যুক্ত করাটা উদ্বেগের বিষয়।

এর ফলে সরকার একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

যদিও ট্রাম্প তাঁর হোয়াইট হাউজের সংস্কারের খরচ ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন বলে দাবি করেছেন, তবে এই ধরনের পদক্ষেপ সরকারের ভাবমূর্তিকে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহারের একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ট্রাম্পের এই ব্র্যান্ডিং কৌশল তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে আরও শক্তিশালী হয়েছে।

হোয়াইট হাউজের কর্মীরা এখন ট্রাম্পের রুচি এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছেন।

এর ফলস্বরূপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাঁর প্রচারণা অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি দৃশ্যমান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের কাজের স্বীকৃতি চেয়েছেন এবং ভোটারদের কাছে তা পরিষ্কার করতে চেয়েছেন।

তবে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ তাঁর ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করার চেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে।

বস্তুত, ট্রাম্পের এই ব্র্যান্ডিং সরাসরি কোনো আইন লঙ্ঘন করে না, তবে এটি প্রচলিত রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করে।

সমালোচকদের মতে, এর ফলে সরকারের কার্যক্রম একজন নেতার রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যা কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

এই প্রসঙ্গে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এগুলো সবই প্রেসিডেন্টের ধারণা এবং তিনি একজন ব্র্যান্ডিং বিশেষজ্ঞ।

তিনি তাঁর এই দক্ষতার মাধ্যমে একটি বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।”

এই প্রসঙ্গে ব্র্যান্ডিং বিশেষজ্ঞ ক্যামিল মুরের মতে, ট্রাম্প ব্যবসার এই কৌশল কাজে লাগিয়েছেন।

তাঁর মতে, ট্রাম্প ঝুঁকি নিতে জানেন এবং কীভাবে প্রভাব তৈরি করতে হয়, সে বিষয়ে তাঁর ভালো ধারণা আছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *