মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনগুলোর আগে ডেমোক্র্যাট দল আবারও গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান প্রতিপক্ষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন ডেমোক্র্যাটরা।
খবর অনুযায়ী, বিশেষ করে ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যগুলোতে ডেমোক্রেটরা এই ইস্যুকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
ভার্জিনিয়ার গভর্নর পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যাবিগেল স্প্যানবার্গার তার রিপাবলিকান প্রতিপক্ষ উইনসম আর্ল-সিয়ার্সের বিরুদ্ধে গর্ভপাতের অধিকারের প্রশ্নে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “যেসব রাজ্যে গর্ভপাতের সুযোগ সীমিত করা হয়েছে, সেখানে নারীদের মৃত্যু হয়েছে।
এই যুক্তির মাধ্যমে স্প্যানবার্গার ভোটারদের কাছে আর্ল-সিয়ার্সের রক্ষণশীল অবস্থানের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সাফল্যের পেছনে গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। যদিও গত বছর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই ইস্যুটি তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
বর্তমানে, ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে, ডেমোক্র্যাটরা একদিকে যেমন অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তেমনি গর্ভপাতের অধিকারের মতো সামাজিক বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ডেমোক্র্যাটরা তাদের রিপাবলিকান প্রতিপক্ষের অতীতের গর্ভপাত বিরোধী মন্তব্যগুলো সামনে আনছেন। উদাহরণস্বরূপ, পেনসিলভানিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা গর্ভপাতের অধিকারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে তুলে ধরছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ায়, পরিকল্পিত মাতৃত্ব (Planned Parenthood)-এর মতো সংগঠনগুলো ডেমোক্রেটদের সমর্থন জানাচ্ছে। তারা রিপাবলিকানদের নতুন করে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে একটি ব্যালট প্রস্তাবের পক্ষে কাজ করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মিনি তিম্মারাজু বলেন, “কিছু বিশেষজ্ঞ প্রায়ই বলেন যে ডেমোক্র্যাটরা অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো বাদ দিয়ে সামাজিক বিষয়গুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা তেমনটা দেখছি না।
যেসব প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন, তারাও বিষয়টিকে সেভাবে দেখছেন না।
রিপাবলিকানরা অবশ্য এই ইস্যুকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। উইনসম আর্ল-সিয়ার্স এবং নিউ জার্সির রিপাবলিকান প্রার্থী জ্যাক কিয়াটারেলি উভয়েই গর্ভপাতের বিষয়টিকে কম গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আর্ল-সিয়ার্স বলেছেন, “কমনওয়েলথকে (যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য) একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়।
অন্যদিকে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি সুপ্রিম কোর্টে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ করেছিলেন, যিনি একসময় “গর্ভপাতের অধিকার রাজ্যের উপর নির্ভর করবে” বলেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্র্যাটদের কৌশল হলো, রিপাবলিকানদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে ভোটারদের আকৃষ্ট করা। তবে, গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি নির্বাচনে কতটুকু প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন