যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যানগুলোতে ভ্রমণ অব্যাহত, অচলাবস্থায় উদ্বেগে স্থানীয় ব্যবসা ও পরিবেশবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অচলাবস্থার কারণে দেশটির জাতীয় উদ্যানগুলোতে দেখা দিয়েছে ভিন্ন চিত্র। অনেক পর্যটকদের আনাগোনা এখনো অব্যাহত থাকলেও, এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং উদ্যানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতির কারণে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
সরকারের কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দেশটির নয় হাজার ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে, বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং সুযোগ-সুবিধা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশ ফি আদায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, অক্টোবরের শুরু থেকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। তবে, পার্কের কর্মীরা না থাকায় সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটন ডিসিতে স্মিথসোনিয়ান জাদুঘরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, বেসরকারি জাদুঘরগুলোতে বেড়েছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। জর্জ ওয়াশিংটনের বাড়ি মাউন্ট ভার্ননে আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি দর্শক সমাগম হয়েছে।
তবে, অচলাবস্থার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার নিউ রিভার গর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছে অবকাশ যাপন কেন্দ্র পরিচালনাকারী এডওয়ার্ড লাভ জানান, তাঁর বুকিংয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব পড়েছে। অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে, ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলেও তিনি মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগে ২০১৮-১৯ সালের অচলাবস্থায় ওয়াশিংটন ডিসির প্রায় ৪ কোটি ৭৪ লক্ষ ডলার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছিল। এবারও পর্যটন খাতে ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ন্যাশনাল পার্ক কনজার্ভেশন অ্যাসোসিয়েশন পার্কগুলো বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, কর্মী সংকটের কারণে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এছাড়া, বন্যপ্রাণী এবং পরিবেশের উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং পার্কগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত একটি সমাধানে পৌঁছানো দরকার, যাতে জাতীয় উদ্যানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখা যায় এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে রক্ষা করা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন