চীনকে টেক্কা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার গোপন চুক্তি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ (Critical Minerals) বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো, অত্যাবশ্যকীয় প্রযুক্তি পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য কমানো।

সোমবার হোয়াইট হাউসে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে দুই দেশের নেতারা প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন ডলারের একটি বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে অস্ট্রেলিয়ার বিরল মৃত্তিকা (Rare Earth) সমৃদ্ধ সম্পদ ব্যবহার করে চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে।

বর্তমানে, চীন বিশ্ববাজারে বিরল মৃত্তিকা খনিজ পদার্থের একটি প্রধান উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ। সম্প্রতি, চীন ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের দেশ থেকে বিরল মৃত্তিকা উপাদানযুক্ত ম্যাগনেট রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।

এই পদক্ষেপের ফলে চীন প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়াতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের এই কৌশল বিশ্ব অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।

এই চুক্তির ফলে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশই গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের যৌথ প্রকল্পে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের দ্রুত বিনিয়োগ নজিরবিহীন।

এর কারণ, এই খনিজ পদার্থগুলো সামরিক সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক গাড়ি, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনসহ আধুনিক প্রযুক্তির জন্য অপরিহার্য।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে, অস্ট্রেলিয়া একাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সব খনিজ সরবরাহ করতে পারবে না। তাই, অন্যান্য দেশগুলোতেও খনিজ পদার্থ অনুসন্ধান ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিনিয়োগ করা জরুরি।

মধ্য এশিয়া এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হতে পারে, যেখানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়ে কিছু প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছিল।

এই চুক্তির পাশাপাশি, দেশ দুটি ‘AUKUS’ নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়েও আলোচনা করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করতে পারবে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তির বিরোধিতা করে বলেছে, এর ফলে অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা বাড়বে।

এই চুক্তির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে প্রযুক্তি বাজারে, সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে মিলে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাবকে মোকাবেলা করতে।

এটি বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারে।

তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *