**ট্রাম্পের এশিয়া সফর: বাণিজ্য ও ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মোড়?**
আসন্ন এশিয়া সফরে যাচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই সফর ঘিরে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের ফলাফল শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর প্রভাব পড়তে পারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কেও।
এই প্রেক্ষাপটে, ট্রাম্পের এশিয়া সফর বাংলাদেশের জন্যেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে, যা বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
সফরসূচি অনুযায়ী, ট্রাম্প মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এরপর তার জাপান যাওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে তিনি বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।
এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়ায়ও তার যাওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন।
এই সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার বাণিজ্য আলোচনা। ট্রাম্প এরই মধ্যে চীনের সঙ্গে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে এর বিনিময়ে তিনি কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।
- এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন সয়াবিন ক্রয় বৃদ্ধি, ফেনটানিল তৈরির উপাদান সরবরাহ কমানো এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলির উপর থেকে চীনের নিয়ন্ত্রণ কমানো।
তবে, বাণিজ্য আলোচনার পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনাও বিদ্যমান। বিশেষ করে, চীন বিরল মৃত্তিকা খনিজ রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্টের মধ্যেকার বৈঠক আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
জাপানে ট্রাম্পের সফরকালে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, তাকাইচি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদার করতে এই বৈঠক সহায়ক হবে।
এছাড়াও, ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা আরও জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, মার্কিন শুল্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার অটোমোবাইল শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
যদিও, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ তহবিলে অংশগ্রহণে দ্বিধা প্রকাশ করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই এশিয়া সফর অনিশ্চয়তায় ভরপুর। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক এবং এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিভাবে পরিবর্তিত হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস