বিতর্কে জর্জরিত, তবুও অবিচল: মেইন সিনেটে প্লাটনারের লড়াই!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে আসন্ন সিনেট নির্বাচনের প্রচারণা এখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী গ্রাহাম প্লাটনারের অতীতের কিছু মন্তব্য এবং একটি ট্যাটুর কারণে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিতর্কের জেরে প্রগতিশীল শিবিরে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আদর্শগত মানদণ্ড নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

প্লাটনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি অতীতে অনলাইনে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যা বিতর্কিত এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ। এমনকি তাঁর শরীরে থাকা একটি ট্যাটু, যা নাৎসিবাদের প্রতীক চিহ্নের মতো দেখতে, সেটিও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

যদিও প্লাটনার জানিয়েছেন, তিনি এই চিহ্নের তাৎপর্য সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং সেটিকে সরিয়ে ফেলেছেন।

এই ঘটনার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, প্লাটনারের অতীত বিতর্কিত হলেও, তাঁর শ্রমিক শ্রেণির প্রতি সমর্থন এবং সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

তাঁরা মনে করেন, রিপাবলিকান দলের প্রবীণ সিনেটর সুসান কলিন্সের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্লাটনার একজন উপযুক্ত প্রার্থী।

তবে, অনেকে প্লাটনারের অতীতের মন্তব্যের জন্য তাঁর প্রার্থিতাকে সমর্থন করতে রাজি নন। তাঁদের মতে, একজন প্রগতিশীল নেতা হিসেবে তাঁর এই ধরনের মন্তব্য এবং কাজের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।

তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, যদি কোনো রিপাবলিকান প্রার্থীর ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতো, তবে কি একই রকম প্রতিক্রিয়া হতো?

এই বিতর্কের মাঝে, প্লাটনারের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন ভারমন্টের স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্লাটনারকে একজন “সাহসী” ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন যিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান।

এদিকে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী নেতারা এ বিষয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার মেইনের গভর্নর জ্যানেট মিলসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যিনি কলিন্সের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।

প্লাটনারের বিতর্কিত মন্তব্য এবং কার্যকলাপের কারণে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, তা শুধু মেইনের নির্বাচনকে নয়, বরং দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল এবং আদর্শগত অবস্থানের ওপরও প্রভাব ফেলছে।

এই ঘটনার পাশাপাশি, ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল পদে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জে জোনসের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

তাঁর বিরুদ্ধে সহিংসতামূলক কিছু বার্তা পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে, যা সেখানকার নির্বাচনে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, প্রার্থীদের অতীত এবং তাঁদের আদর্শগত অবস্থান এখন ভোটারদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

একই সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আদর্শগত মানদণ্ড বজায় রাখা এবং বিতর্কিত প্রার্থীদের সমর্থন করা—উভয় ক্ষেত্রেই কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *