যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগের ফলে বাজার দখলের লড়াইয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করা ইন্টেল তাদের মুনাফা দেখিয়েছে।
নতুন প্রকাশিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে চিপ প্রস্তুতকারক এই সংস্থাটির লাভের চিত্র উঠে এসেছে।
সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে শেষ হওয়া তিন মাসে ইন্টেলের নিট আয় দাঁড়িয়েছে ৪.১ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৭ বিলিয়ন ডলারের লোকসান।
এই সময়ে কোম্পানির আয়ও গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়ে ১৩.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে, যেখানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় ৮ শতাংশ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার গত গ্রীষ্মে ইন্টেলে বিনিয়োগ করার পর থেকেই শেয়ারের দামে এই উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ইন্টেলে সরকারের ১০ শতাংশ মালিকানা গ্রহণের ঘোষণা করা হয়েছিল।
এই পদক্ষেপ রিপাবলিকান পার্টির দীর্ঘদিনের ধারণার পরিপন্থী ছিল, যেখানে তারা মনে করত, সরকার করদাতাদের অর্থ দিয়ে কোনো কোম্পানির লাভ-ক্ষতি নির্ধারণ করতে পারে না।
ইন্টেল এই শেয়ারগুলো হস্তান্তরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট, ২০২২’-এর অধীনে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পেয়েছে।
এই চুক্তির আওতায় ইন্টেলকে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে।
এছাড়াও, ইন্টেল সম্প্রতি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এনভিদিয়া থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার এবং জাপানের প্রযুক্তি জায়ান্ট সফটব্যাংক থেকে ২ বিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।
১৯৬৮ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার বিপ্লবের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ইন্টেল, অ্যাপলের আইফোন উন্মোচনের মাধ্যমে মোবাইল কম্পিউটিং-এর দিকে হওয়া পরিবর্তনে পিছিয়ে পড়েছিল।
এরপর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) উত্থান তাদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যেখানে এনভিদিয়ার চিপ প্রযুক্তি এখন বাজারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইন্টেলের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপ-বু তান, কোম্পানির আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে এবং বাজারের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাই এবং বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস