ভিতর ভাঙল? ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্রিপ্টো জগতে ঝড়, বাইনান্সের প্রতিষ্ঠাতা ক্ষমা!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, বিনান্সের প্রতিষ্ঠাতা চ্যাংপেং ঝাওকে ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এর সঙ্গে জড়িত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

ঝাও, যিনি ক্রিপ্টো জগতে “সিজেড” নামেই পরিচিত, বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ বিনান্স তৈরি করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি তার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অর্থ পাচার রোধে ব্যর্থ হয়েছিলেন এবং এর ফলস্বরূপ তিনি চার মাস কারাভোগ করেন।

এই খবরটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পের প্রতি তার সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্পের মেয়াদে ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কিছু আইনি জটিলতা দেখা গিয়েছিল।

তিনি বরাবরই এই শিল্পের প্রতি নমনীয় ছিলেন। অনেকের মতে, এই ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্প কার্যত ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পকে আরও উৎসাহিত করতে চাইছেন।

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিনান্স দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ। তবে, এর প্রতিষ্ঠাতা ঝাওকে বিভিন্ন সময়ে জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় তদন্তে, বিনান্সের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিশু নির্যাতন, মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত অর্থ স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপরেই ঝাওকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

ট্রাম্পের এই ক্ষমা ঘোষণার কারণ হিসেবে জানা যায়, তিনি অনেকের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছিলেন। তাদের মতে, ঝাওয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক ছিল না এবং তাকে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, তিনি মনে করেন ঝাওকে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার” হতে হয়েছে।

অন্যদিকে, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, একজন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার করে এ ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত। বিশেষ করে, যখন একজন ব্যক্তি গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

সমালোচকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ আইনের শাসনের প্রতি দুর্বলতা তৈরি করতে পারে।

এই ঘটনার প্রভাব শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বিশ্বজুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। বিনান্স এবং এর সহযোগী সংস্থা বিনান্স ডট ইউএস-এর কার্যক্রমের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প এবং তার পরিবারের সদস্যরাও ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের একটি ক্রিপ্টো প্রজেক্টও রয়েছে, যা এই ঘটনার পরে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

বর্তমানে, বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। তবে, ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এর নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।

তাই, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *