যুদ্ধ জয়ের কৌশল! রাশিয়া ও ইউক্রেনের অত্যাধুনিক অস্ত্রের লড়াইয়ে চমক!

যুদ্ধক্ষেত্রে টিকে থাকতে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে।

একদিকে যেমন উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, তেমনই দেখা যাচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে একেবারে সাদামাটা উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগানো হচ্ছে।

সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী, রাশিয়া জেট-চালিত বোমা ব্যবহার করা শুরু করেছে, আর ইউক্রেন হালকা বিমানকে দূরপাল্লার ‘আত্মঘাতী বোমারু বিমান’ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে।

এছাড়া, দু’পক্ষই ড্রোন এবং মনুষ্যবিহীন প্রযুক্তির ওপর জোর দিচ্ছে।

যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী কৌশল এবং সরঞ্জামের দিক থেকে অনেক বেশি তৎপর ছিল।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়ার সেনারাও তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়েছে।

তারা গাড়িতে অতিরিক্ত সুরক্ষা কবচ যুক্ত করেছে, নতুন ধরনের ছদ্মবেশ তৈরি করেছে এবং ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে আক্রমণের কৌশল নিয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘রুবিকন’ নামে একটি বিশেষ ড্রোন ইউনিট তৈরি করেছে, যারা বিভিন্ন কৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

কিছুদিন আগে, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য হালকা বিমান ব্যবহার করে একটি কৌশল তৈরি করে।

এই বিমানগুলোতে পাইলটের সিটের বদলে অতিরিক্ত জ্বালানি ট্যাঙ্ক এবং নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বসানো হয়েছে।

কল সাইন ‘গোরোনিচ’-এর নেতৃত্বে একদল বিমান উৎসাহী এই প্রকল্পটি তৈরি করেছেন।

তারা এখন ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছেন।

সম্প্রতি, তারা সারানস্কে একটি কারখানায় হামলা চালিয়েছে, যেখানে বিস্ফোরক ও মাইন তৈরি করা হয়।

অন্যদিকে, রাশিয়া তাদের পুরনো বোমাগুলোকে নতুন রূপ দিয়ে উন্নত করেছে।

তারা পুরোনো ‘ফ্রি-ফল’ বোমা থেকে জেট-চালিত বোমা তৈরি করছে, যা প্রায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআই) সূত্রে খবর, রাশিয়া এরই মধ্যে সোভিয়েত আমলের বোমাগুলোকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পাল্লার গ্লাইড যুদ্ধাস্ত্রে রূপান্তর করেছে।

গত সপ্তাহে একদিনে প্রায় ৩০০টি এমন বোমা ইউক্রেনের ওপর বর্ষণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় বাহিনীও সমুদ্রপথে হামলার জন্য ড্রোন তৈরি করেছে।

এই ড্রোনগুলো রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর হয়েছে।

এসবিইউ জানিয়েছে, তারা নতুন প্রজন্মের ড্রোন তৈরি করেছে, যা ১,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে এবং ২,০০০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম।

এমনকি, এতে মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সিস্টেমও যুক্ত করা যেতে পারে।

তবে, ইউক্রেন এখনো পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে নিয়মিত অস্ত্রের সরবরাহ চাইছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যারা ইউক্রেনকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে, তারা জীবন বাঁচাচ্ছে।

আর যারা দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করবে, তারা যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে সাহায্য করবে।

রাশিয়া প্রতি মাসে ৬,০০০ এর বেশি শাহেদ-ধরণের ড্রোন তৈরি করতে পারে বলে জানা গেছে।

তাই, ইউক্রেন চাইছে রাশিয়ার অভ্যন্তরে থাকা ড্রোন তৈরির কারখানাগুলোতে আঘাত হানতে, যার জন্য তাদের আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *