আতঙ্কে কাঁপছে সুদান! গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে আরএসএফ-এর, ভাঙনের আশঙ্কা?

সুদানের ডারফুর অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ শহর এল ফাশের-এ দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান ঘাঁটি দখলের দাবি করেছে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)। পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর বরাতে জানা গেছে, আরএসএফ-এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত দুটি ভিডিওতে তাদের সেনাদের সেনাবাহিনীর ষষ্ঠ পদাতিক ঘাঁটির সামনে উল্লাস করতে দেখা গেছে।

যদিও রয়টার্স এই স্থানটি শনাক্ত করতে পারলেও, ভিডিওর তারিখ যাচাই করতে পারেনি।

যদি আরএসএফ-এর এই দাবি সত্যি হয়, তাহলে এটি তাদের জন্য একটি বিশাল জয় হবে। এর ফলে তারা বিশাল ডারফুর অঞ্চলের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় করতে পারবে এবং এর মাধ্যমে দেশটি কার্যত বিভক্ত হয়ে যেতে পারে।

ইতোমধ্যেই আরএসএফ উত্তর কোরদোফান প্রদেশের বারাহ শহরও দখল করেছে, যা ডারফুর ও রাজধানী খার্তুমের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপনকারী রাজ্য।

গত ১৮ মাস ধরে আরএসএফ এল ফাশের অবরোধ করে রেখেছে। এই অবরোধের কারণে সেখানকার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, আরএসএফ প্রায়ই ড্রোন ও আর্টিলারি হামলা চালাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, শহরটির নিয়ন্ত্রণ আরএসএফের হাতে গেলে জাতিগত প্রতিশোধের ঘটনা ঘটতে পারে।

জাতিসংঘের একটি তদন্ত দল জানিয়েছে, আরএসএফ এল ফাশের অবরোধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। একইসঙ্গে, সুদানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ ‘এল ফাশের প্রতিরোধ কমিটি’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শহরটির জন্য লড়াই এখনও চলছে এবং তারা সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর সেখানকার যোদ্ধাদের একা ফেলে আসার অভিযোগ তুলেছে।

আরএসএফের প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, এল ফাশেরের পশ্চিম দিক থেকে কিছু মানুষ এবং গাড়ি শহর ছেড়ে যাচ্ছে।

তবে তারা বেসামরিক নাগরিক নাকি সেনা সদস্য, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরএসএফের হেফাজতে থাকা সেনাদের ছবি দেখা গেছে, যা রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এই সংঘর্ষের কারণে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশটির অর্ধেক মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে।

সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। তবে, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত সার্বভৌম পরিষদ উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো প্রকার আলোচনার খবর অস্বীকার করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *