আতঙ্কের কারণ? অর্থনীতির এই জটিল সমীকরণ!

বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক অস্থিরতা যেন এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে একদিকে যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) বাজারে বিনিয়োগ বাড়ছে, তেমনি এর ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা যাচ্ছে অনিশ্চয়তা।

অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এই বাজারের উত্থান-পতন একটি বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে, যা পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিষয়টি যদি সহজভাবে বলি, তাহলে এমন—অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে সমাজের একটি অংশ দ্রুত ধনী হচ্ছে, কিন্তু অন্য অংশটি পিছিয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিকে ‘কে-শেপড’ অর্থনীতি বলা হয়।

অর্থাৎ, উন্নয়নের ধারাটা অনেকটা ‘K’-এর মতো, যেখানে উপরের অংশটা দ্রুত বাড়ছে, আর নিচের অংশটি ধীর গতিতে উঠছে বা স্থিতিশীল থাকছে।

শেয়ার বাজারে অস্থিরতা, প্রযুক্তিগত ত্রুটি, সরকারি নীতিগত সিদ্ধান্ত—এসব কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই মুহূর্তে বাজারের ভালো চিত্র দেখা গেলেও এর গভীরে রয়েছে দুর্বলতা।

এই দুর্বলতা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এআই খাতে বিনিয়োগ যদি কমে যায়, তাহলে দেশটির অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে। আবার, কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, সুদের হার কমানোর জন্য ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত বাজারের জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ হলো— হয় ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হোক, অথবা দীর্ঘমেয়াদী লাভের কথা ভেবে বিনিয়োগ করা হোক। স্বল্প মেয়াদে লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বাজারের ভালো-মন্দ উভয় দিকেই নজর রাখতে হবে। তারা একটি ‘শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল’-এর উদাহরণ দেন। এই উদাহরণ অনুযায়ী, বিড়ালটি একইসঙ্গে জীবিত এবং মৃত—অর্থনীতিও অনেকটা তেমনই, একদিকে শক্তিশালী, অন্যদিকে দুর্বল।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা বিষয়টি বিবেচনা করি, তাহলে দেখব—বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা আমাদের দেশেও প্রভাব ফেলছে। আমদানি-রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ—এসবের মাধ্যমে আমরাও বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত।

ফলে, উন্নত দেশগুলোতে হওয়া যেকোনো পরিবর্তন আমাদের অর্থনীতিতেও কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলে।

সুতরাং, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *