বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানি, অ্যামাজন, তাদের কর্মীবাহিনীতে বড় ধরনের ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
জানা গেছে, কোম্পানিটি ইতিমধ্যে ১৪,০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
মূলত, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি হিসেবে এবং কার্যক্রম আরও সুসংহত করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর্মী নিয়োগ করবে এবং যারা ইতোমধ্যে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে যোগ্যদের এই পদগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
অ্যামাজনের পক্ষ থেকে কর্মীদের অভিজ্ঞতা বিষয়ক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বেথ গালেত্তি এক বিবৃতিতে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত খাতে কর্মী নিয়োগ অব্যাহত রাখব এবং একই সাথে আমরা আমাদের কার্যক্রম আরও সুবিন্যস্ত করার চেষ্টা করছি।”
অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান্ডি জ্যাসি-র মতে, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, অ্যামাজনকে একটি বৃহৎ স্টার্টআপের মতো করে গড়ে তোলা।
জ্যাসি চান, এআই প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানি যেন দ্রুত পরিবর্তন এবং উদ্ভাবন করতে পারে।
গালেত্তি আরও উল্লেখ করেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্ব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।
বর্তমান প্রজন্মের এআই প্রযুক্তি ইন্টারনেটের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তি, যা কোম্পানিগুলোকে দ্রুত উদ্ভাবন করতে সাহায্য করছে।
আমরা বিশ্বাস করি, গ্রাহক এবং ব্যবসার সুবিধার্থে দ্রুত কাজ করার জন্য আমাদের আরও সুসংগঠিত, কম স্তরযুক্ত এবং মালিকানা-সংশ্লিষ্ট হতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইকুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশন’-এর (Equal Employment Opportunity Commission) তথ্য অনুযায়ী, অ্যামাজনের কর্পোরেট কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৩,৫০,০০০।
এই হিসাবে, বর্তমান ছাঁটাই তাদের মোট কর্মীর প্রায় ৫ শতাংশ।
এর আগে ২০২৩ সালে, কোম্পানিটি তাদের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগ, অ্যামাজন স্টোরস, অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস এবং অন্যান্য বিভাগ থেকে প্রায় ২৭,০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিল।
সে সময় অ্যান্ডি জ্যাসি বিশ্ব অর্থনীতির খারাপ অবস্থার কারণে এই ছাঁটাইয়ের কথা বলেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উন্নত বিশ্বে বিশেষ করে তরুণ প্রযুক্তি কর্মীদের জন্য চাকরির বাজারে ইতোমধ্যে কিছু সতর্ক সংকেত দেখা যাচ্ছে।
তারা আশঙ্কা করছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-এর কারণে অনেক মানুষের চাকরি চলে যেতে পারে, কারণ কোম্পানিগুলো এখন অটোমেশন বাড়িয়ে খরচ কমানোর চেষ্টা করছে।
যদিও এআই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্বেগের পেছনে খুব বেশি গবেষণা নেই।
তবে ভবিষ্যতের জন্য এর প্রভাব কেমন হবে, তা এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, যেখানে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনা এখনো শোনা যায়নি, তবে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লে কর্মসংস্থানের ধরনে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন