শিরোনাম: সিরিয়ায় নিখোঁজ মার্কিন সাংবাদিক, ১৩ বছর পর ‘আউস্টিন টিস মৃত’: চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় নিখোঁজ হওয়া মার্কিন সাংবাদিক আউস্টিন টিসের (Austin Tice) ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সিরিয়ার প্রাক্তন এক প্রভাবশালী উপদেষ্টা। সম্প্রতি, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন (CNN)-এর সঙ্গে কথা বলার সময় বাশার আল- আসাদ সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বাসাম আল-হাসান চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, টিসকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বাশার আল-আসাদ নিজেই। এই ঘটনায় টিসের পরিবার এখনো তাদের ছেলের জীবিত থাকার বিষয়ে আশা ধরে রেখেছে।
২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে সিরিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মার্কিন সাংবাদিক ও সাবেক মেরিন সেনা কর্মকর্তা আউস্টিন টিস। ঘটনার ১৩ বছর পর, সম্প্রতি সিএনএন-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বাসাম আল-হাসান, যিনি একসময় বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন, সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, টিসকে হত্যার নির্দেশ স্বয়ং আসাদ দিয়েছিলেন।
আল-হাসান আরও জানান, তিনি এই হত্যার নির্দেশ মানতে প্রথমে দ্বিধা বোধ করলেও পরে তা কার্যকর করতে বাধ্য হন। বাশার আল-আসাদের নির্দেশে ২০১৩ সালে টিসকে হত্যা করা হয়।
যদিও আল-হাসানের এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। এমনকি, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই (FBI)-এর পরীক্ষায়ও তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি।
আউস্টিন টিসের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের কারণ ছিল। তাকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করা হয়েছে।
আসাদ সরকারের পতনের পর, টিসের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানতে তৎপর হয় মার্কিন কর্তৃপক্ষ। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে, এফবিআই একটি দল সিরিয়ায় পাঠায় এবং তারা টিসকে শেষবারের মতো যেখানে দেখা গিয়েছিল, সেই স্থানগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
সিএনএন-এর অনুসন্ধানে জানা যায়, টিসকে আটকের পর সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর একটি কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। এরপর তার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে তাকে মুসলিমদের ধর্মীয় বাক্য পাঠ করতে দেখা যায়।
মার্কিন তদন্তকারীরা দ্রুত এই ভিডিওটিকে সাজানো হিসেবে চিহ্নিত করেন।
টিসের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাসাম আল-হাসানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ফরাসি প্রসিকিউটররা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে বাশার আল-আসাদ এবং আল-হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আউস্টিন টিসের মা ডেবরা টিস দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলের মুক্তির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এখনো বিশ্বাস করেন, তার ছেলে জীবিত আছেন এবং একদিন অবশ্যই ফিরে আসবেন।
টিসের পরিবারের আইনজীবী সিএনএনকে জানান, তারা এখনো আউস্টিনের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছেন।
অন্যদিকে, সিরিয়ার নতুন সরকার টিস মামলার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। তবে, টিসের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন