**এভারেস্টের দুর্গম পথে: জিম মরিসনের দুঃসাহসিক স্কি-অভিযান**
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট। এই পাহাড় জয় করার স্বপ্ন অনেকের, কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সবসময় সহজ হয় না।
আর যদি সেই কাজটি হয় স্কিইংয়ের মতো দুঃসাহসিক উপায়ে, তাহলে তো কথাই নেই। সম্প্রতি, জিম মরিসন নামের এক পর্বতারোহী এমনই এক অসাধ্য সাধন করেছেন।
তিনি এভারেস্টের উত্তর দিকের ভয়ঙ্কর ‘হনbein কলোয়ার’ পথে স্কি করে নেমে এসেছেন, যা আগে কেউ কখনও করেনি।
এই অভিযান শুধু একটি স্কিইং অভিযান ছিল না, বরং ছিল মরিসনের প্রয়াত সঙ্গী, স্কি-পবর্তারোহী হিলারি নেলসনের প্রতি উৎসর্গীকৃত এক শ্রদ্ধার্ঘ্য।
২০২২ সালে হিলারিও স্কি করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তাঁর এই স্বপ্নের প্রতি সম্মান জানাতেই যেন মরিসনের এই দুঃসাহসিক অভিযান।
হনbein কলোয়ার পথটি অত্যন্ত বিপদজনক। ৯,০০০ ফুটেরও বেশি খাড়া পথ বেয়ে নামতে হয়, যেখানে তুষার, বরফ আর পাথরের ভয়ঙ্কর মিশ্রণ বিদ্যমান।
সামান্য ভুলের কারণে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এই পথে স্কি করাটা যেন এক প্রকার ‘ফ্রি সলোয়িং’-এর মতোই, যেখানে সামান্যতম ভুলও ডেকে আনতে পারে চরম বিপদ।
অভিযানটি সহজ ছিল না। প্রতিকূল আবহাওয়া, অক্সিজেনের অভাব এবং তুষারপাতের ঝুঁকির মধ্যে তাঁদের এই যাত্রা করতে হয়েছে।
রাতে তাঁরা বরফের মধ্যে নিজেদের জন্য জায়গা তৈরি করে, দড়ির সঙ্গে নিজেদের বেঁধে ঘুমাতেন। একদিন প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যে তাঁদের তাবু উড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
চূড়ায় আরোহণের পর, মরিসন যখন স্কি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন, তখন তাঁর মনে ছিল হিলারির কথা।
ভয়ঙ্কর পথ, প্রতিকূল পরিস্থিতি—সবকিছুকে জয় করে তিনি এগিয়ে যান। স্কি করার সময় তিনি প্রতিটি বাঁক খুব সতর্কতার সঙ্গে পার করেছেন।
তাঁর ভাষায়, “অবস্থা খুবই খারাপ ছিল, কিন্তু আমি অনেকখানি পথ স্কি করতে পেরেছি।”
নিরাপদে নিচে নেমে আসার পর, তিনি চিৎকার করে তাঁর সঙ্গীকে স্মরণ করেন।
পরের দিন, যখন তিনি উত্তর দিকের বিশাল পর্বতটির দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তখন যেন হিলারির উপস্থিতি অনুভব করতে পারছিলেন।
জিম মরিসনের এই দুঃসাহসিক অভিযান শুধু একটি ক্রীড়া-কৌশল ছিল না, বরং এটি ছিল অদম্য সাহস, একাগ্রতা এবং ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তাঁর এই কীর্তি পর্বতারোহণ এবং স্কিইংয়ের জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস