সুদানে ভয়াবহতা: যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে একজোট জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও জর্ডান!

সুদানের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জার্মানি, জর্ডান এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং দারফুর অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির বর্ণনা করেছেন।

শনিবার বাহরাইনের মানামা ডায়ালগ নিরাপত্তা সম্মেলনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার দারফুরের এল-ফাশেরের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সেখানে প্যারামিলিটারি বাহিনী, যাদের র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) বলা হয়, তারা শহরটি দখল করে নিয়েছে।

কুপার আরও বলেন, “গাজায় নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অগ্রগতি হলেও, সুদানে মানবিক সংকট এবং ভয়াবহ সংঘাত মোকাবিলায় এটি ব্যর্থ হচ্ছে। দারফুর থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী সেখানে নৃশংসতা চলছে।”

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভ্যাডেফুলও সুদানের পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেন এবং আরএসএফ-কে সরাসরি তাদের সহিংসতার জন্য দায়ী করেন।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, “সুদান তার প্রাপ্য মনোযোগ পায়নি। সেখানে অমানবিক পরিস্থিতিতে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের এটা বন্ধ করতে হবে।”

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরএসএফ যোদ্ধারা এল-ফাশের শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে হামলা, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর জাতিগত নিধন এবং যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটেছে।

যদিও আরএসএফ হাসপাতালগুলোতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু শহর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন, স্যাটেলাইট চিত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই সংঘাতের ফলে ইতিমধ্যে কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে, সম্মেলনের খবর সংগ্রহের জন্য আসা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাংবাদিকদের ভিসা বাতিল করে দেয় বাহরাইন সরকার। সরকার এর কারণ ব্যাখ্যা করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর আগে এপি বাহরাইনে কারাবন্দী মানবাধিকার কর্মী আবদুলহাদি আল-খাওয়াজার অনশন ধর্মঘট নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, যে কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আল-খাওয়াজা পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ডেনমার্ক থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর অনশন ভেঙে দেন।

আন্তর্জাতিক মহল সুদানের এই সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং সেখানে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *