ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক: শুনানিতে কী রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট? ফলাফলে উদ্বেগে সকলে

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে শুনানির প্রস্তুতি চলছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। এই মামলার রায় শুধু একটি বিতর্কিত নীতি নিয়েই নয়, বরং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কতখানি, সেই সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নেরও উত্তর দেবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিবেচনা করে, এই খবরটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আসলে, ট্রাম্প তাঁর শাসনামলে বেশ কয়েকটি দেশের ওপর জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর মধ্যে চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার মতো দেশগুলোও ছিল।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, জরুরি অবস্থার সময় বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে কিনা। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত শুধু আমেরিকার অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করবে না, বিশ্ব বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতিকেও নতুন পথে চালিত করতে পারে।

আদালতে শুনানির মূল বিষয় হলো, ট্রাম্প যে আইন ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, সেই আইনের (International Emergency Economic Powers Act বা IEEPA) ব্যাখ্যা কী হবে। এই আইনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থায় আমদানি ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে পারেন।

ট্রাম্পের যুক্তি হলো, শুল্ক আরোপ করাও এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, আইনে শুল্কের সরাসরি উল্লেখ নেই, তাই এটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না।

তাদের মতে, জরুরি অবস্থায় অন্য দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ রয়েছে, কিন্তু শুল্ক আরোপের বিষয়টি ভিন্ন।

আদালতের শুনানিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কতটা আইনসম্মত। এর আগে বাইডেন প্রশাসনের কিছু নীতির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট একই ধরনের যুক্তিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করেছে।

আদালত মনে করে, কোনো নীতি যদি দেশের অর্থনীতি বা রাজনীতির উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে, তাহলে কংগ্রেসের সুস্পষ্ট অনুমোদন প্রয়োজন। ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন, শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি প্রযোজ্য।

কারণ, এই ধরনের শুল্ক আদতে একটি করের মতো, যা কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া আরোপ করা যায় না।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতির উপর কেমন প্রভাব পড়ছে। ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে আমেরিকান ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ ভোক্তাদের উপর।

অন্যদিকে, সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, এই শুল্ক ‘নিয়ন্ত্রক শুল্ক’, যা বিদেশি হুমকি মোকাবিলায় জরুরি।

এই মামলার রায় শুধু আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব অনেক।

বাণিজ্য শুল্কের এই বিতর্কের ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়মকানুন নতুন করে নির্ধারিত হতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করবে। তাই, সুপ্রিম কোর্টের এই মামলার দিকে আমাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা দরকার।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *