ডজার্সের দাপট: বেতন সীমা আসলে কি ভালো? বড় প্রশ্ন!

লস অ্যাঞ্জেলেস ডজর্স-এর (Los Angeles Dodgers) বিপুল অর্থ ব্যয়ের পর, আমেরিকান বেসবলে খেলোয়াড়দের বেতন নির্ধারণের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দলটির খেলোয়াড়দের বেতন অন্যান্য দলের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় অনেকে মনে করছেন, এই খেলাটিতে একটি নির্দিষ্ট বেতনসীমা (Salary Cap) থাকা উচিত।

কিন্তু এই ধারণা কি সত্যিই সঠিক?

ডজর্স দলের খেলোয়াড়দের বেতন শুনলে অনেকের চোখ কপালে উঠবে।

তাদের খেলোয়াড়দের বেতন তালিকা প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার, যা অন্য দলগুলোর গড় বেতনের দ্বিগুণেরও বেশি। শুধু তাই নয়, গত বছর চ্যাম্পিয়ন হওয়া ডজর্স দলের বেতনের থেকেও এই অঙ্ক ৮৪ মিলিয়ন ডলার বেশি।

বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আগামী বছর খেলোয়াড় ইউনিয়ন ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে বেতন সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আলোচনার মূল বিষয় হতে পারে বেতনসীমা নির্ধারণ করা হবে কিনা।

কিন্তু খেলাধুলায় এত বেশি অর্থ খরচ করলেই যে জয় নিশ্চিত, তেমনটা কিন্তু সবসময় হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যদি ধরা হয়, ক্যানসাস সিটি চিফস (Kansas City Chiefs) তাদের খেলোয়াড়দের পেছনে বেশি অর্থ খরচ করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাহলে বিষয়টি তেমন গুরুতর নয়।

কারণ, ডজর্স দল যেভাবে খেলোয়াড়দের পেছনে অর্থ ঢেলেছে, সেটি অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে।

বেসবলের ইতিহাসে দেখা যায়, ভালো দল এবং খারাপ দলের মধ্যে সাফল্যের পার্থক্য খেলোয়াড়দের বেতনের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করে না। বরং, খেলোয়াড়ের পারফর্মেন্স, ইনজুরি এবং খেলার ভাগ্য—এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

উদাহরণস্বরূপ, যদি টরন্টো ব্লু জেইস (Toronto Blue Jays) ডজর্স-কে হারাতে পারত, তাহলে গত ১২ বছরে ১০টি ভিন্ন দল চ্যাম্পিয়ন হতো। এই সময়ে, আমেরিকান ফুটবল লীগ (NFL) -এ বেতনসীমা থাকার কারণে মাত্র ৬টি দল সুপার বোল জিতেছে, এবং বাস্কেটবল লীগ (NBA)- তে ৮টি দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ ভিক্টর ম্যাথিসন (Victor Matheson) এর মতে, বেসবলে ভালো দল ও খারাপ দলের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ পার্থক্য বেতনের কারণে হয়ে থাকে। খেলোয়াড়দের ইনজুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ভালো খেলার মতো বিষয়গুলো এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

অন্য একজন অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু জিম্বালিস্ট (Andrew Zimbalist) মনে করেন, বেতন খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্সে ২৫ শতাংশ প্রভাব ফেলে।

বেতনসীমা নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ফলে বেসবল খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন এর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বিরোধ দেখা দিতে পারে, যা খেলার মৌসুম বাতিল করার মতো গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। খেলোয়াড় ইউনিয়ন মনে করে, বেতনসীমা ছাড়াই বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব।

বেসবল খেলার মালিকরা সম্ভবত এখন একটি নির্দিষ্ট বেতনসীমা চাচ্ছেন এবং তাদের সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। ডজর্স-এর জয় সম্ভবত এই সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

যদি এমনটা হয়, তবে ২০২৩ সালের মৌসুমের অনেক খেলাই হয়তো মাঠে গড়াবে না।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *