যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আরোপিত শুল্ক নিয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলছে। এই মামলার রায় শুধু আমেরিকার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেই প্রভাব ফেলবে না, বরং বিশ্ব বাণিজ্য এবং নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগের ক্ষেত্রেও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প সরকারের সময়ে চীন, কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি হলো, জরুরি পরিস্থিতিতে শুল্ক আরোপ করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের রয়েছে। তাঁরা বলছেন, এটি দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি ছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই নেওয়া হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী।
তাঁদের মতে, জরুরি অবস্থার সুযোগ নিয়ে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার বিভাজন নীতির লঙ্ঘন। ছোট ব্যবসায়ীরাও এই শুল্কের কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং দেউলিয়া হওয়ার সম্ভবনাও তৈরি হয়েছে।
মামলাটি মূলত দুটি প্রধান শুল্কের ওপর কেন্দ্রীভূত। প্রথমটি ছিল মাদক পাচারকে কেন্দ্র করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পর কানাডা, চীন ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি। দ্বিতীয়টি হলো, বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপ, যা ট্রাম্প প্রশাসনের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল।
আদালতে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক চলছে এবং এই মামলার রায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপথকে নতুন দিকে মোড় দিতে পারে। যদি আদালত ট্রাম্পের বিপক্ষে রায় দেয়, তবে এর ফলস্বরূপ শুল্কের পরিমাণ ফেরত দিতে হতে পারে এবং ভবিষ্যতে জরুরি অবস্থার সংজ্ঞা ও প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম তৈরি হতে পারে।
একইসাথে, এই রায়ের ফলে অন্যান্য দেশের সরকারও তাদের বাণিজ্যনীতি এবং নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে পারে।
এই মামলার রায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতির জন্যেও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের নীতি বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কে পরিবর্তন আনতে পারে। তাই, এই মামলার দিকে এখন সবার দৃষ্টি রয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।