বিধ্বস্ত ইউপিএস বিমানের ধ্বংসস্তূপ: নিহতদের খুঁজতে উদ্ধারকর্মীদের চেষ্টা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে একটি ইউপিএস কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লুইসভিল মুহম্মদ আলী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং এটি বিমানবন্দরের কাছেই বিধ্বস্ত হয়। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি) এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিমানটির বাম উইংয়ে আগুন লেগেছিল এবং একটি ইঞ্জিন খুলে গিয়েছিল।

এনটিএসবি’র এক সদস্য জানিয়েছেন, কেন এই আগুন লেগেছিল এবং ইঞ্জিন কীভাবে খুলে গেল, তা জানতে তদন্তকারীদের এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে।

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল একটি ম্যাকডনেল ডগলাস এমডি-১১ মডেলের কার্গো বিমান। বিমানটি ১৯৯১ সালে তৈরি করা হয়েছিল।

বিমানবন্দরের কাছাকাছি একটি এলাকায় বিধ্বস্ত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পরে। এতে কাছাকাছি অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং একটি অটো-সেলভেজ ইয়ার্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার জানিয়েছেন, নিহত শিশুটি তার এক অভিভাবকের সঙ্গে সেলভেজ ইয়ার্ডে ছিল।

দুর্ঘটনার পর এলাকার আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং পোড়া গন্ধ অনুভব করেছেন।

স্থানীয় একটি বারের কর্মী কাইলা কেনাডি জানিয়েছেন, তিনি যখন বারান্দায় এক গ্রাহকের কাছে বিয়ার নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ বিদ্যুতের আলো নিভে যায়।

তিনি আকাশ থেকে জ্বলন্ত একটি বিমানকে তাদের ভলিবল কোর্টের ওপর পড়তে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার করে সবাইকে জানানোর চেষ্টা করেন।

গভর্নর বেশিয়ার জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকর্মীরা আরও কিছু মানুষের সন্ধানে কাজ করছেন।

তবে জীবিত কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বিমানবন্দরের কাছে আবাসিক এলাকা, একটি জল উদ্যান এবং জাদুঘরও রয়েছে।

বিমানবন্দরটি শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বুধবার বিমানবন্দরের কার্যক্রম আংশিকভাবে পুনরায় চালু করা হয়েছে।

এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে ইউপিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।

লুইসভিলের প্যাকেজ হ্যান্ডলিং সুবিধাটি ইউপিএস-এর বৃহত্তম কেন্দ্র, যেখানে ২০,০০০ এর বেশি কর্মী কাজ করেন।

এখানে প্রতিদিন ৩০০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয় এবং ঘণ্টায় ৪ লক্ষাধিক প্যাকেজ বাছাই করা হয়।

বিমান বিধ্বস্তের কারণ সম্পর্কে প্রাক্তন ফেডারেল ক্র্যাশ তদন্তকারী জেফ গুজেত্তি বলেন, রানওয়েতে থাকাকালীন বিমানের ইঞ্জিনে কিছু সমস্যা হতে পারে।

ইঞ্জিন আংশিকভাবে খুলে যাওয়ার কারণে ফুয়েল লাইনে ছিদ্র হয়ে আগুন লাগতে পারে। এছাড়াও, ফুয়েল লিক হয়েও ইঞ্জিনে আগুন লাগতে পারে।

১৯৭৯ সালে শিকাগোর ও’হারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের বাম ইঞ্জিন খুলে গেলে similar একটি ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে ২৭৩ জন নিহত হয়।

গুজেত্তি আরও জানান, এই দুটি বিমানে একই জেনারেল ইলেকট্রিক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছিল এবং দুর্ঘটনার আগে উভয় বিমানেরই মেরামত করা হয়েছিল।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *