সোমালিয়ার জলদস্যুদের হামলায় একটি মাল্টার পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চালানো এই হামলায় জলদস্যুরা মেশিনগান ও রকেট চালিত গ্রেনেড ব্যবহার করে জাহাজটি দখল করার চেষ্টা করে।
ব্রিটিশ নৌ-কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং জলদস্যুদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে।
আক্রমণের শিকার হওয়া জাহাজটি ভারত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে যাচ্ছিল। নিরাপত্তা সংস্থা অ্যাম্ব্রে’র মতে, জলদস্যুরা সম্ভবত ইরানের একটি মাছ ধরার ট্রলারকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
আক্রান্ত জাহাজের নাবিকেরা নিজেদের রক্ষার জন্য জাহাজের ভেতরের একটি সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের কাছে কোনো সশস্ত্র নিরাপত্তা দল ছিল না।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের এই উত্থান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের কারণ। এক দশক আগেও, বিশেষ করে ২০১১ সালে, এই অঞ্চলে জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছিল।
ওই বছর ২৩৭টি হামলার ঘটনা ঘটেছিল, যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতি প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। মুক্তিপণ বাবদ জলদস্যুদের দিতে হয়েছিল প্রায় ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বর্তমানে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের কারণে লোহিত সাগরে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় জলদস্যুদের তৎপরতা আবারও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক নৌবহর এবং বিভিন্ন দেশের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে একসময় জলদস্যুতা কমে এসেছিল।
কিন্তু সম্প্রতি এই অঞ্চলে জলদস্যুদের হামলা বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা জোরদার করা না হলে, বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে, যা বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
কারণ, সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে বিঘ্ন ঘটলে তা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে ব্যাহত করে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস