যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ান পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা, সরকারি অচলাবস্থার জেরে সংকটে বিমান চলাচল।
যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি অচলাবস্থার কারণে দেশটির আকাশপথে বিমান চলাচলে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের সমস্যা। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, কর্মী সংকটের কারণে তারা কিছু ব্যস্ততম বিমানবন্দরে আগামী শুক্রবার থেকে ১০ শতাংশ ফ্লাইট কমাবে।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রগামী বা যুক্তরাষ্ট্র হয়ে অন্য গন্তব্যে যেতে চাওয়া বাংলাদেশি যাত্রীদের পড়তে হতে পারে বিড়ম্বনায়।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা (বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক) বেতন পাচ্ছেন না।
এর ফলে অনেক কর্মী কাজে যোগ দিতে পারছেন না, অথবা অতিরিক্ত কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এফএএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোন কোন বিমানবন্দরে ফ্লাইট কমানো হবে, তা তারা খুব শীঘ্রই ঘোষণা করবে।
তবে এই সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি।
সাধারণত, ছুটির দিনগুলোতে বিমানবন্দরে কর্মীদের মধ্যে শিফটিংয়ের সমস্যা দেখা যায়। তবে, সরকারি অচলাবস্থার কারণে পরিস্থিতি গুরুতর আকার ধারণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।
এমনটা হলে আকাশপথে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। অনেক কন্ট্রোলার এরই মধ্যে তাদের পরিবারের খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বর্তমানে, বিমানবন্দরের টার্মিনালগুলোতে এবং আঞ্চলিক কন্ট্রোল সেন্টারগুলোতে কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে এই সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত, অন্তত ৩৯টি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কেন্দ্রে কর্মী সংকট দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও জিওফ ফ্রিম্যান বলেছেন, এই অচলাবস্থার কারণে বিমান চলাচলে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এবং ভ্রমণকারীরা তাদের আস্থা হারাচ্ছে।
তিনি দ্রুত এই অচলাবস্থা নিরসনের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে ইচ্ছুক বা বর্তমানে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য এই পরিস্থিতিতে কিছু বিষয় জানা জরুরি।
ফ্লাইট বাতিল হলে, টিকিটের সম্পূর্ণ মূল্য ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, অন্য কোনো ফ্লাইটে সিট বুক করারও সুযোগ থাকতে পারে।
তবে, এই বিষয়ে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
যাত্রীদের সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং ভ্রমণের আগে এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা জেনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।