খাবার কেন রাজনৈতিক? এসএনএপি-এর রাজ্যে পরিবারগুলোর আহাজারি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা সংকটে, দুর্ভোগে দরিদ্র পরিবারগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য, পশ্চিম ভার্জিনিয়ার (West Virginia) দরিদ্র পরিবারগুলোর জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে তাদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (Food assistance program) -এর সুবিধা পেতে সমস্যা হচ্ছে।

দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিশেষ করে ‘সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম’ (SNAP) এর ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কিভাবে তারা তাদের পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেবে, সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার মায়েরা।

ওনিটা নরিস নামের এক নারী, যিনি একা হাতে দুই সন্তানের দেখাশোনা করেন, তিনি জানান, তার মাসিক আয় প্রায় ২৮০০ মার্কিন ডলার (সে সময়কার বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৩ লক্ষ টাকা)। এর অর্ধেকটা চলে যায় ঘর ভাড়া বাবদ।

এরপর বাচ্চাদের দেখাশোনার খরচ, বিদ্যুৎ বিল, জল বিল এবং ফোনের বিল দিতে হয়। সব খরচ মিটিয়ে তার হাতে খাবার কেনার জন্য থাকে মাত্র ১০০ ডলার (প্রায় ১১ হাজার টাকা)।

সাধারণত, এসএনএপি (SNAP) থেকে তিনি প্রতি মাসে ২৬৫ ডলার (প্রায় ২৯ হাজার টাকা) খাদ্য সহায়তা হিসেবে পেতেন। কিন্তু সরকারি অচলাবস্থার কারণে সেই সুবিধা এখন বন্ধ।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি আমার সন্তানদের খাবার দিতে পারছি না। এটা আমাকে খুব কষ্ট দেয়। আমি চেষ্টা করছি, কিন্তু পারছি না।”

পশ্চিম ভার্জিনিয়ার প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ, অর্থাৎ প্রায় ১.৭ মিলিয়ন বাসিন্দা এই এসএনএপি (SNAP) সুবিধার ওপর নির্ভরশীল। এই রাজ্যের খাদ্য ব্যাংকগুলোতেও (Food bank) খাদ্য সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।

সেখানকার ‘সিস্যাপ/লোভস এন্ড ফিশেস’ (CCAP/Loaves & Fishes) নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, তাদের কাছে সাহায্যপ্রার্থীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। আগে যেখানে প্রতি সপ্তাহে ৭২টি পরিবারের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া হতো, সেখানে এখন তা বেড়ে ১৫৯-এ দাঁড়িয়েছে।

পশ্চিম ভার্জিনিয়ার আরেক বাসিন্দা লরা বোওলেস। পাঁচ সন্তানের মা লরা জানান, তার স্বামী একটি দোকানে কাজ করেন এবং তার আয়ের বেশিরভাগটাই এখন খাবারের পেছনে খরচ হচ্ছে।

এসএনএপি (SNAP) বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি জানান, হয়তো তাদের ইন্টারনেট বিল এবং গাড়ির বীমা পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এমনকি বাচ্চাদের পার্কে নিয়ে যাওয়ার মতো অতিরিক্ত খরচও তারা কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (Food assistance program) নিয়ে সৃষ্ট এই সংকট সেখানকার রাজনীতিবিদদের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিভাবে দ্রুত এর সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *