মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক ফেরত নিয়ে জটিলতা: বিশ্ব বাণিজ্যে এর প্রভাব।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিভিন্ন পণ্যের ওপর যে শুল্ক (ট্যারিফ) আরোপ করা হয়েছিল, তা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। তবে এই প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফেরত পাওয়ার বিষয়ে নতুন করে আশা দেখছেন।
শুল্ক ফেরত দেওয়ার বিষয়টি কিভাবে কাজ করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন শুল্কের মাধ্যমে সরকার প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আদায় করেছে। এই অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি একটি জটিল প্রক্রিয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট শুনানিতে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যদি ব্যবসায়ীরা এই মামলায় জেতেন, তাহলে কিভাবে এই অর্থ ফেরত দেওয়া হবে?
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এতে বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্ক ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন হবে। অনেক ব্যবসায়ী হয়তো সরাসরি এই সুবিধা নাও পেতে পারেন।
তাঁদের আলাদাভাবে নিম্ন আদালতে আপিল করতে হতে পারে। এর ফলে সময় এবং অর্থ দুটোই বেশি লাগতে পারে।
ইতিমধ্যে কিছু বিনিয়োগকারী সংস্থা (যেমন: ওপেনহাইমার এবং জেফারিস) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শুল্ক ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
এই সংস্থাগুলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে এই অধিকার কিনে নিচ্ছে এবং পরবর্তীতে শুল্ক ফেরত পেলে তারা একটি অংশ পাবে।
এই ধরনের চুক্তিতে ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিক কিছু অর্থ পেলেও, পুরো অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
ওপেনহাইমারের একটি বিপণন উপকরণে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা তাঁদের প্রাপ্য অর্থের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে পেতে পারেন।
এর বিনিময়ে তাঁরা আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষোভের শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা দ্বিধায় পড়েছেন।
কারণ, তাঁরা কম মূল্যে তাঁদের অধিকার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশ্ব বাণিজ্যের প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিভিন্ন দেশের শুল্ক নীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও এর শিকার হতে পারেন। বিশ্ব অর্থনীতির এই জটিল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য শুল্ক নীতি এবং তার পরিবর্তনের দিকে নজর রাখা অপরিহার্য।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন