দাঁত পড়ার পর শিশুরা যে কল্পিত পরীর কাছ থেকে টাকা পায়, এই বিষয়টি পশ্চিমা বিশ্বে বেশ পরিচিত। টুথ ফেরি বা দাঁতের পরীর গল্পটি শিশুদের কাছে খুবই প্রিয়। তারা বিশ্বাস করে, দাঁত পড়লে সেই দাঁত বালিশের নিচে রাখলে, পরী এসে সেটি নিয়ে যায় এবং তার বদলে কিছু টাকা দিয়ে যায়।
সম্প্রতি, এই কাল্পনিক চরিত্রটি নিয়ে বেশ মজাদার একটি ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক পরিবারে, যেখানে ছেলের প্রথম দাঁতটি পড়ে যায়। দাঁতটি পড়ার সময়ে ছেলেটি সিরিয়াল খাচ্ছিল, ফলে টুপ করে সেটি গিলে ফেলে।
দাঁত হারানোর চেয়েও বড় বিষয় ছিল, টুথ ফেরির কাছ থেকে টাকা পাওয়া নিয়ে তার আগ্রহ। সে জানতে চায়, দাঁত তো পেটে চলে গেছে, এখন সে টাকা পাবে কীভাবে?
ছেলের এই প্রশ্নে হতভম্ব হয়ে পড়েন বাবা। তিনি দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করেন।
তিনি ছেলেকে বোঝান, দাঁত না থাকলেও টাকা পাওয়া যেতে পারে। এরপর তিনি দাঁতের ডিপার্টমেন্ট থেকে আসা ‘ফর্ম টিএফ২৩০’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন।
সেই ফর্মে দাঁতের রঙ থেকে শুরু করে আরও অনেক খুঁটিনাটি তথ্য পূরণ করতে হতো। এমনকি, দাঁতের বাজারদর অনুযায়ী কত টাকা পাওয়া যাবে, সেই হিসাবও সেখানে উল্লেখ করা ছিল।
পুরো বিষয়টি আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য, বাবার বন্ধু, যিনি পেশায় একজন গ্রাফিক ডিজাইনার, তাকে এই ফর্মটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার দায়িত্ব দেন।
বন্ধুটি তার ডিজাইন দক্ষতা দিয়ে ফর্মটিতে দাঁতের একটি নকশা, সরকারি বারকোড এবং একটি বিশেষ সিল যুক্ত করেন।
ফর্মটি তৈরি হয়ে গেলে, ছেলে সেটি পূরণ করতে বসে যায়। সে জানতে চায়, ফর্মটি কি সত্যি? বাবা তখন হেসে বলেন, অবশ্যই সত্যি।
এরপর ছেলেটি পরম যত্নে ফর্মটি বালিশের নিচে রেখে দেয়, যেন টুথ ফেরি এসে তার কাজ সেরে যেতে পারে।
সাধারণত, পশ্চিমা বিশ্বে প্রথম দাঁতের জন্য একজন টুথ ফেরি ১ থেকে ২ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩০ থেকে ২৬০ টাকা) দিয়ে থাকে।
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, শিশুদের মন জয় করার জন্য বাবা-মায়ের চেষ্টা কতখানি। টুথ ফেরির গল্পটি একটি পশ্চিমা সংস্কৃতি হলেও, শিশুদের আনন্দ দেওয়ার এই প্রচেষ্টা সব সংস্কৃতিতেই বিদ্যমান।
সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বাবা-মায়ের এমন উদ্ভাবনী ক্ষমতা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান