তালিবানের কারাগারে ব্রিটিশ বৃদ্ধের জীবন নিয়ে শঙ্কা!

আফগানিস্তানে বন্দী, ৭৯ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিকের জীবন এখন গুরুতর ঝুঁকিতে। তালেবান কর্তৃক আটক হওয়া এই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, পিটার রেইনল্ডস নামের ওই ব্যক্তি কারাগারে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর চিকিৎসার অভাবে জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, পিটার রেইনল্ডস ও তাঁর ৭৫ বছর বয়সী স্ত্রী বার্বি রেইনল্ডস দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে একটি প্রশিক্ষণ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে বামিয়ান প্রদেশে নিজেদের বাড়িতে যাওয়ার সময় তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক আমেরিকান-চীনা বন্ধু এবং ‘রিবিল্ড’ নামক প্রতিষ্ঠানের একজন অনুবাদক।

পিটারের মেয়ে সারা এন্টউইসল জানিয়েছেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়েছে। কারাগারে থাকাকালীন তাঁর বুকে সংক্রমণ, চোখের গুরুতর সমস্যা এবং হজম সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার ও চিকিৎসার অভাবে তিনি মারাত্মক কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সারা আরও জানান, তাঁর বাবাকে মারধর করা হয়েছে এবং শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তিনি হৃদরোগের রোগী, গ্রেপ্তারের আগে তাঁর একবার মিনি-স্ট্রোকও হয়েছিল।

পরিবারের পক্ষ থেকে তালেবানের প্রতি আকুল আবেদন জানানো হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়ার জন্য। সারা বলেন, “আমরা তালেবানের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, দয়া করে তাঁদের মুক্তি দিন এবং বাড়িতে পাঠাবার ব্যবস্থা করুন। সেখানে গেলেই তিনি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ পাবেন, যা তাঁর জীবন বাঁচাবে।”

উল্লেখ্য, রেইনল্ডস দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে কাজ করছেন। ‘রিবিল্ড’ নামের তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি বিগত ১৮ বছর ধরে আফগান স্কুলগুলোতে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। এমনকি ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পরেও তাঁরা তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে যান। বার্বি রেইনল্ডস ছিলেন প্রথম নারী যিনি তালেবানের কাছ থেকে সম্মাননা সনদ পেয়েছিলেন।

আটক হওয়ার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মায়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কারণেই তাঁদের আটক করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বিবিসি-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে তালেবান কর্মকর্তা আব্দুল মতিন কানি জানিয়েছিলেন, তাঁদের আটকের বিষয়ে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে এবং মূল্যায়নের পর দ্রুত তাঁদের মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও জানান, ওই তিন বিদেশি নাগরিকের কাছে আফগান পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে।

জানা গেছে, ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছে না পরিবার। তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা আফগানিস্তানে আটক দুই ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *